ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) ধারাবাহিক হামলায় বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা। এসব হামলায় অসংখ্য শিশুর প্রাণহানির ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। নিহত শিশুদের মধ্যে অন্যতম ১১ বছর বয়সী ইয়াকিন হাম্মাদ—যিনি গাজার সবচেয়ে কম বয়সী ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে এই হৃদয়বিদারক তথ্য উঠে এসেছে।
উজ্জ্বল হাসি, মানবিক উদ্যোগ আর স্বেচ্ছাসেবী কাজে নিবেদিত ইয়াকিন, উত্তর গাজার দেইর আল-বালাহ’র আল-বারাকা এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর গোলাবর্ষণের শিকার হন। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৩ মে) রাতে ওই অঞ্চলে তীব্র যুদ্ধ চলাকালে তিনি নিহত হন।
আল জাজিরা-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়াকিন ও তার বড় ভাই মোহাম্মদ হাম্মাদ গাজার বাস্তুচ্যুত পরিবারদের মাঝে খাবার, পোশাক ও খেলনা বিতরণ করতেন। ইয়াকিন ভিডিও বার্তার মাধ্যমে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় বেঁচে থাকার নানা টিপস শেয়ার করতেন—যেমন গ্যাস না থাকলে কীভাবে সহজভাবে রান্না করা যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে ইয়াকিন লিখেছিলেন, “আমি চেষ্টা করি অন্য বাচ্চাদের একটু আনন্দ দিতে, যাতে তারা যুদ্ধ ভুলে থাকতে পারে।”
ইয়াকিন ছিলেন গাজাভিত্তিক মানবিক সংগঠন ‘ওয়েনা কালেকটিভ’-এর একজন সক্রিয় সদস্য। তিনি প্রায়ই বিভিন্ন শরণার্থী শিবির ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে শিশুদের মাঝে হাসি ও শান্তি ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করতেন।
যুদ্ধের ভয়াবহতার মধ্যেও ইয়াকিন মাথা নত করেননি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি শিশুদের পাশে ছিলেন—নাচ, হাসি, আইসক্রিম বিতরণ এবং একসঙ্গে প্রার্থনার মাধ্যমে তাদের সাহস জুগিয়ে গেছেন।
ইয়াকিনের মৃত্যু শুধু গাজাবাসীর নয়, মানবতার জন্যই এক অপূরণীয় ক্ষতি।