সরকারি চাকরি আইন সংশোধন অধ্যাদেশ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিদিন এক ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। বুধবার (২৮ মে) সকালে মন্ত্রী পরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম এই ঘোষণা প্রদান করে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত সচিবালয়ে কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করবেন। একই সময়ে দেশের অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এই কর্মবিরতি চলমান থাকবে। তবে হাসপাতাল ও জরুরি সেবা প্রদানকারী অন্যান্য সংস্থায় প্রয়োজনে কম সময়ের জন্য কর্মবিরতি থাকবে।
কো-চেয়ারম্যান বলেন, দেশে এখন ক্রান্তিকাল চলছে। খুব শিগগিরই কোরবানির ঈদ এবং বাজেট ঘোষণা আসছে। তাই সাধারণ মানুষের অসুবিধা এড়াতে সব বিষয় বিবেচনা করে আগামী দিনগুলোতে শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাঠপর্যায়ে দফতর, অধিদফতর, সংস্থা, জেলা ও বিভাগীয় অফিসগুলোতেও প্রতিদিন একই সময় কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে এবং দাবি না পূরণ হওয়া পর্যন্ত বা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত চলবে।
আগেই ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ জানান, সচিবালয়ের আন্দোলনরত কর্মচারীদের দাবি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করবেন। বর্তমানে তিনি বিদেশে আছেন। দেশে ফেরার পর আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদ সংশোধিত সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয়, যা ২৫ মে গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার এই ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে, যা চারটি অপরাধের জন্য চাকরিচ্যুতির বিধান এনেছে। এতে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারীরা যদি অনানুগত্য, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, কর্ম থেকে অনুপস্থিতি বা অন্য কর্মচারীদের কর্তব্যে বাধা দেওয়ার মতো কাজ করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী অভিযোগ গঠনের সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে এবং দোষী সাব্যস্ত হলে সাত কর্মদিবসের মধ্যে শাস্তির নোটিশ প্রদান করা হবে।
আন্দোলনকারীরা এই অধ্যাদেশকে ‘নিবর্তনমূলক ও কালাকানুন’ হিসেবে অভিহিত করে দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। গত চার দিন ধরে তাদের আন্দোলনের কারণে সচিবালয় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।