আগামী পাঁচ বছরে রেকর্ড ভাঙতে পারে বৈশ্বিক উষ্ণতা: বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা
আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে যেকোনো একটি বছরে পৃথিবীর তাপমাত্রা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে— এমন সতর্কবার্তা দিয়েছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO)। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ধরনের রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা প্রায় ৮০ শতাংশ।
সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো ২০৩০ সালের আগেই এমন একটি বছর আসতে পারে, যেখানে গড় বৈশ্বিক উষ্ণতা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করবে। বিজ্ঞানীরা বিষয়টিকে “বিস্ময়কর” এবং “একটি বড় সতর্ক সংকেত” হিসেবে দেখছেন।
২০২৪ সালেই পৃথিবীর গড় বার্ষিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সীমা পেরিয়ে গেছে, যা প্যারিস চুক্তির নির্ধারিত লক্ষ্যসীমা। অথচ ২০১৪ সাল পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা এমন কিছু ঘটার সম্ভাবনাকেও অস্বীকার করেছিলেন। এর আগে, ২০২৩ সালকে রেকর্ডকৃত ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল কো ব্যারেট বলেছেন, “আমরা গত এক দশকে একাধিক বছর এমন দেখেছি, যেখানে তাপমাত্রা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় বেশি ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আগামী বছরগুলোতেও এ ধরনের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। এর প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতি, জনজীবন, বাস্তুতন্ত্র এবং পুরো গ্রহে।”
WMO-র জলবায়ু পরিষেবা বিভাগের পরিচালক ক্রিস হিউইট বলেন, “আমরা এখন এক বিপজ্জনক গন্তব্যের দিকে এগোচ্ছি। তবে এখনো সময় আছে। কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারলে এই উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।”
জলবায়ু পরিবর্তনের মাত্রা পরিমাপ করা হয় ১৮৫০ থেকে ১৯০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর ভূতলের গড় তাপমাত্রা—১৩.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস—কে ভিত্তি ধরে। সেই সময়ের পর থেকেই শিল্পায়নের ধাক্কায় দ্রুত উষ্ণতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। পরিবেশবিদদের মতে, এই শিল্পায়ন এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানব কর্মকাণ্ডই পৃথিবীর বর্তমান উষ্ণায়নের জন্য দায়ী।