ঢাকা | বঙ্গাব্দ

কীভাবে সাধারণ ভারতীয়রা পাকিস্তানের আইএসআই-এর হয়ে কাজ করছে?

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : May 31, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা এবং ‘অপারেশন সিন্দুর’-এর পর পাকিস্তানের প্রতিহিংসামূলক হামলার জেরে ভারতের কাউন্টার-ইন্টেলিজেন্স সংস্থাগুলো তীব্র সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। গত এক মাসে রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট ও পাঞ্জাব থেকে অন্তত ১৫ জনকে পাকিস্তানের আইএসআই-র হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক বা গ্রেফতার করা হয়েছে।

মুম্বাইয়ের এক ইঞ্জিনিয়ার ফেসবুকে হানি ট্র্যাপের শিকার হয়ে ভারতীয় যুদ্ধজাহাজের গোপন নকশা পাকিস্তানের কাছে পাচার করায় তদন্তকারীরা উদ্বিগ্ন। হরিয়ানার একজন ট্রাভেল ভ্লগার পাকিস্তানের লাহোরে সশস্ত্র লোকজনের সঙ্গে ঘুরতে দেখা গেছে। রাজস্থানের একজন সরকারি কর্মচারীর সাতটি অজানা পাকিস্তান সফরের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও একজন সিম কার্ড সরবরাহকারী পাকিস্তানের আইএসআই-কে তথ্য সরবরাহ করছিলেন। এই গ্রেফতারকৃতরা সবাই এক ধরনের বিস্তৃত গুপ্তচর নেটওয়ার্কের অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।

সিআরপিএফের মোতি রাম জাট, যিনি ২০২৩ থেকে পাকিস্তানিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে গোপন তথ্য পাচার করছিলেন, দিল্লি থেকে গ্রেফতার ও বরখাস্ত হয়েছেন।

মুম্বাইয়ের নৌ ডকইয়ার্ডে কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার রবিন্দ্র বর্মা পাকিস্তানি এজেন্টদের সঙ্গে ফেসবুকে যোগাযোগ রেখে সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজের গোপন তথ্য পাচার করেছেন বলে তদন্তে দেখা গেছে।

হরিয়ানার জনপ্রিয় ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাও আইএসআই-এর সঙ্গে যোগসূত্র থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। তার মোবাইল ও ল্যাপটপ থেকে ১২ টেরাবাইটের বেশি তথ্য উদ্ধার করা হয়েছে, যেখানে পাকিস্তানের এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে।

গুজরাটের স্বাস্থ্যকর্মী সাহেদেব সিং গোহিল ভারতীয় বিমানবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গোপন স্থাপনার ছবি-ভিডিও পাকিস্তানের কাছে পাঠানোর দায়ে আটক হয়েছেন।

হরিয়ানার বিভিন্ন জেলায় পাকিস্তানের উদ্দেশে গুপ্তচরবৃত্তি করে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল যুবকদের একটি ক্লাস্টার গ্রেফতার হয়েছে। রাজস্থানের একজন সরকারি কর্মচারী শাকুর খানও সাতবার পাকিস্তান সফর এবং সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে আটক হয়েছেন।

দিল্লি পুলিশের গ্রেফতারকৃত কাসিম অবৈধভাবে ভারতীয় সিম কার্ড পাকিস্তানে পাচার করতেন, যা আইএসআই এজেন্টরা গুপ্তচরবৃত্তির কাজে ব্যবহার করত।

উত্তরপ্রদেশের ব্যবসায়ী শাহজাদ এবং জালন্ধরের মোহাম্মদ মুরতাজা আলীসহ আরও কয়েকজনকে আইএসআই-র সঙ্গে যোগসূত্র ও তথ্য পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এসব গ্রেফতারের ঘটনা থেকে বোঝা যায় পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ভারতীয় সীমান্ত ও কৌশলগত স্থাপনায় বিস্তৃত গুপ্তচর নেটওয়ার্ক তৈরি করে রেখেছে। পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা ও অপারেশন সিন্দুরের পর ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে এবং গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে নজরদারি কঠোর করেছে। রাজস্থানের জয়সলমারে মাত্র এক মাসে সাতজন সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। হরিয়ানায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আর্থিক ও ভ্রমণ তথ্যও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সরকারের দাবি, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের বাইরে আরও অনেকে পাকিস্তানকে গোপন তথ্য পাচার করে চলেছেন, যাদের ধরতে ভারতের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো নিরলস কাজ করছে।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স