নতুন অর্থবছরের বাজেটে আয়কর কাঠামোয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রায় ৫০টি পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এসব সংস্কারের ফলে একদিকে রাজস্ব আদায়ে গতি আসবে, অন্যদিকে করদাতাদের জন্য কর ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও সহজীকরণ নিশ্চিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সাধারণ করদাতাদের জন্য ন্যূনতম আয়কর ৫ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব রয়েছে। নতুন করদাতাদের ক্ষেত্রে এই পরিমাণ ১ হাজার টাকা হতে পারে। ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা নির্ধারণের চিন্তাভাবনা রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এই সীমা বাড়িয়ে করা হতে পারে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
চলমান স্ল্যাবভিত্তিক কর হার বিলুপ্ত করে নতুন করে ১০% থেকে ৩০% পর্যন্ত হার নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এতে করে কর কাঠামো আরও যুক্তিযুক্ত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
কৃষি খাতেও আনা হচ্ছে নতুন কর নীতিমালা। কৃষি আয় যদি ৫ লাখ টাকার বেশি হয়, তাহলে তা করের আওতায় আসবে। তবে কৃষিপণ্য সরবরাহে উৎস কর কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে কৃষকরা প্রণোদনা পান।
নতুন বাজেটে আপন ভাইবোনের মধ্যে সম্পদ হস্তান্তর করমুক্ত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। অতিরিক্ত করের পরিমাণ পরবর্তী বছরগুলোতে সমন্বয় করে ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থাও রাখা হতে পারে।
ব্রোকারেজ হাউজগুলোর উৎস কর হার কমানোর প্রস্তাব রয়েছে। এছাড়া মোবাইল ফোন অপারেটরদের জন্য টার্নওভার কর ১.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হতে পারে এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর ৫ শতাংশ হারে কর আরোপের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এছাড়া ১২টি নির্দিষ্ট সেবায় কর রিটার্ন জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা শিথিল করার প্রস্তাব রয়েছে। পাশাপাশি, ১৫২টি পণ্যের আমদানির ওপর অগ্রিম আয়কর আরোপ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
জমি বিক্রির ক্ষেত্রে ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স ১৩ শতাংশ করার কথাও ভাবা হচ্ছে, যা এই খাতে কর সংগ্রহে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বর্তমানে দেশে ১ কোটি ১৫ লাখের বেশি টিআইএনধারী থাকলেও আয়কর রিটার্ন জমা দেন মাত্র প্রায় ৪৫ লাখ ব্যক্তি। নতুন নীতিমালার ফলে এই সংখ্যাও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।