নিম্নচাপজনিত টানা বৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্লাবন ও জলাবদ্ধতার পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বিশেষ করে শেরপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের নিম্নাঞ্চলে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো মানুষ।
শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার কালি নগর ও পাগলার মুখ এলাকায় উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি আরও বেড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বৃষ্টির পানিতে কাঁচা ধান ভিজে যাওয়ায় তা শুকাতে পারছেন না তারা। পাশাপাশি, উজানের পানি বাড়লে বন্যার আশঙ্কাও করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায়ও বৃষ্টির প্রকোপে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। দক্ষিণ ইউনিয়ন, মোগড়া ইউনিয়নসহ অন্তত তিনটি ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকাই এখনো পানিতে ডুবে রয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। ডুবে গেছে ফসলের মাঠ ও মাছের ঘের। এদিকে, বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় ভীত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।
রাঙামাটিতেও একই চিত্র। বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বাড়ছে পানি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে। অনেকে রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করলেও দিনের বেলায় বাসায় ফিরে যাচ্ছেন। পাহাড় ধসের ঝুঁকি থাকলেও এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি এবং যান চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে।
অন্যদিকে, বান্দরবানে টানা পাঁচ দিনের ভারী বৃষ্টিপাতে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা ও আলিকদম এলাকার কিছু নিচু জায়গায় সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে লামা-আলিকদম সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে যানবাহন চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে।
সব মিলিয়ে পাহাড়ি ঢল, ভারী বৃষ্টিপাত ও দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে পাহাড়ি ও সমতল উভয় এলাকাতেই দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। স্থানীয় প্রশাসন দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকলেও স্থায়ী সমাধানের জন্য দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।