ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বেড়েছে বরাদ্দ, খরচের সক্ষমতা নিয়ে সংশয়

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jun 3, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:

বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো একটি টেকসই স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। স্বাস্থ্যসেবায় সংকট যেন পিছু ছাড়ছে না। চিকিৎসা ব্যয়ের বড় অংশ—প্রায় ৬৪ শতাংশ—ভার নিতে হয় সাধারণ মানুষকে। অথচ দেশে রয়েছে প্রায় ৭০০ সরকারি হাসপাতাল। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ স্বাস্থ্যখাতে সর্বনিম্ন বরাদ্দ দেয়, তবুও প্রতিবছর এই বরাদ্দের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশই খরচ করতে ব্যর্থ হয় স্বাস্থ্য বিভাগ।

অনেকে বাজেটের স্বল্পতাকেই স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে প্রধান অন্তরায় হিসেবে দেখেন। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা। ২০২২ সালে স্বাস্থ্যখাতে ৩৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও খরচ হয়েছে মাত্র ২২ হাজার কোটি টাকা। ২০২১ সালে ৭ হাজার কোটি এবং ২০২০ সালে ১০ হাজার কোটির বেশি টাকা ফেরত গেছে। এর পেছনে রয়েছে নেতৃত্বের দূরদর্শিতার অভাব, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ঘাটতি এবং বাস্তবায়ন দুর্বলতা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, “আমাদের প্রক্রিউরমেন্ট আইন ও বিধিমালা স্বাস্থ্যখাতের জন্য উপযোগী নয়। অধিকাংশ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপকের কোনো পেশাগত ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ নেই। তারা সরাসরি চিকিৎসক থেকে ম্যানেজার হয়ে যান।”

চলতি বছরের বাজেটে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চার হাজার কোটি টাকা আলাদা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা বাজেটে পাওয়া যায়নি।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, “নগর স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন, সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা সম্প্রসারণ, এবং জনস্বাস্থ্যের নতুন কাঠামো তৈরির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতিফলন এবারের বাজেটে নেই, যদিও স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের কাজ অনেক আগেই শুরু হয়েছিল।”

২০২৫-২৬ অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা, যা গত বছরের চেয়ে মাত্র ৫০১ কোটি টাকা বেশি। বিশেষজ্ঞরা বাজেট সংশোধনের সময় এই বরাদ্দ যেন কমানো না হয়, সে বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছেন।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স