নতুন করে যুদ্ধবন্দি বিনিময়ে যুক্ত হয়েছে ইউক্রেন ও রাশিয়া। সোমবার (৯ জুন) শুরু হওয়া এই বিনিময় আগামী কয়েক দিন চলবে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ফ্রান্সভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘ফ্রান্স-২৪’ মঙ্গলবার (১০ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
জুনের শুরুতে শান্তি আলোচনার একমাত্র কার্যকর ফল হিসেবে এই বন্দি বিনিময় চুক্তি বাস্তবায়ন হয়েছে। যদিও তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধে এটি কোনো বড় অগ্রগতি নয়, বরং সামান্য মানবিক সফলতা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
রাশিয়া এখনো আক্রমণ বন্ধে কঠোর শর্ত আরোপ করছে এবং নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব বারবার প্রত্যাখ্যান করছে।
সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বার্তায় জেলেনস্কি জানান, “আজ থেকে বন্দি বিনিময় শুরু হয়েছে, যা পর্যায়ক্রমে চলবে।” তিনি ইউক্রেনের পতাকায় মোড়ানো মুক্তিযোদ্ধাদের উল্লাস ও আলিঙ্গনের ছবি পোস্ট করে জানান, “ফিরে আসা বন্দিদের মধ্যে রয়েছেন আহত, গুরুতর আহত এবং ২৫ বছরের কম বয়সী যোদ্ধারা।”
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও এ বিনিময়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানায়, এটি ২ জুন ইস্তাম্বুলে হওয়া এক চুক্তির অংশ। তবে কতজন বন্দি মুক্তি পেয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি কেউই।
ইস্তাম্বুলের আলোচনায় দুই পক্ষ জানিয়েছিল, এক হাজারের বেশি বন্দি বিনিময় হবে—যা এই যুদ্ধ চলাকালে সবচেয়ে বড় বন্দি বিনিময় হিসেবে বিবেচিত। তবে চুক্তি বাস্তবায়নে জটিলতা দেখা দেয় যখন মস্কো ও কিয়েভ পরস্পরের ওপর বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগ তোলে।
এর আগে, রোববার (৮ জুন) জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, রাশিয়া রাজনৈতিক চক্রান্ত করছে এবং তারা আহত, অসুস্থ ও ২৫ বছরের কম বয়সী বন্দিদের মুক্তি দিচ্ছে না, যা চুক্তির পরিপন্থী।
অন্যদিকে, রাশিয়া অভিযোগ করে, কিয়েভ নিহত ইউক্রেনীয় সৈন্যদের মরদেহ গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করেছে। তারা জানায়, সীমান্ত এলাকায় রেফ্রিজারেটেড ট্রাকে সংরক্ষিত রয়েছে প্রায় ১,২০০ ইউক্রেনীয় সৈন্যের মরদেহ।
যদিও এই বন্দি বিনিময় যুদ্ধবিরতির আলো জ্বালাতে কিছুটা সাহায্য করেছে, তবে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় এখনো বড় ধরনের রাজনৈতিক সমঝোতার প্রয়োজন রয়েছে। পারস্পরিক আস্থার ঘাটতি এবং রাশিয়ার কঠোর অবস্থান যুদ্ধবিরতিকে এখনও অনিশ্চিত করে রেখেছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।