প্রয়োজনে পাকিস্তানের গভীরে ঢুকে হামলা চালাবে ভারত': হুঁশিয়ারি জয়শঙ্করের
ব্রাসেলস, বেলজিয়াম: ইউরোপ সফরে থাকা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর প্রতিবেশী পাকিস্তানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রয়োজনে পাকিস্তানের আরও গভীরে ঢুকে হামলা চালানো হবে। সোমবার (৯ জুন) সংবাদমাধ্যম পলিটিকোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
জয়শঙ্কর স্পষ্ট করে বলেন, "সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসী হামলা হলে ভারত পাকিস্তানের যেকোনো স্থানে আঘাত হানবে। আমরা এভাবে বসে থাকব না। তাদের কাছে আমাদের বার্তা স্পষ্ট—ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামের মতো বর্বরোচিত হামলা যদি তারা (পাকিস্তান) চালায়, তাহলে প্রতিশোধ নেওয়া হবে, বিশেষ করে সন্ত্রাসী সংগঠন ও তাদের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে।"
তিনি আরও যোগ করেন, "তারা যেখানেই লুকিয়ে থাকুক না কেন, আমাদের কিছু যায় আসে না। পাকিস্তানের গভীরে থাকলেও আমরা সেখানে ঢুকে আঘাত হানব।"
সন্ত্রাসবাদ ও কাশ্মীর ইস্যু
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় ব্যস্ত জয়শঙ্কর উল্লেখ করেন, পাকিস্তান খোলাখুলিভাবে হাজার হাজার সন্ত্রাসীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ভারতের মধ্যে অস্থিরতা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, "সন্ত্রাসবাদকে রাষ্ট্রীয় নীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারে পাকিস্তান খুবই অভ্যস্ত। এটাই মূল সমস্যা।" মে মাসের ১০ তারিখে ভারতের বিমান হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেদিন পাকিস্তানের আটটি প্রধান বিমানঘাঁটি অকার্যকর করা হয়েছিল, যার ফলেই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্ভব হয়েছিল।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে ফিগারো-কে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্কর বলেছেন, "আসল সমস্যা কাশ্মীর নয়, সমস্যা সন্ত্রাসবাদ। পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদকে লালন ও সমর্থন করায় এটি ভারত-পাকিস্তানের ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।" তিনি আবারও স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সন্ত্রাসীরা যেখানেই থাকুক, ভারত তাদের খুঁজে বের করবে—এমনকি পাকিস্তানের ভেতরেও।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ভারতের অবস্থান
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কে জয়শঙ্কর বলেন, "ভারত কোনো পক্ষের সমর্থন করে না।" তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মস্কো ও কিয়েভ উভয় স্থানেই সফর করেছেন এবং ভারত উভয় দেশকেই সহায়তা দিয়েছে। তিনি যুদ্ধের অবসান ও সরাসরি আলোচনার ওপর জোর দেন।
জয়শঙ্কর বলেন, "এই যুদ্ধের কারণে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গোটা বিশ্ব চায় যুদ্ধ যেন শেষ হয়। ভারত 'গ্লোবাল সাউথ'-এর পক্ষ থেকে কথা বলছে।"