টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল: লর্ডস যেন ‘পেসার প্যারাডাইস’, রাবাদার ফাইফারের পর স্টার্ক-কামিন্স শো

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল: প্রথম দিনে উইকেটের ফুলঝুরি, রাবাদা-স্টার্কের দাপট

লর্ডস: আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের প্রথম দিনেই উইকেটের ফুলঝুরি ফুটেছে। বুধবার (১১ জুন) লর্ডসে পেসারদের দাপটে মোট ১৪টি উইকেট পড়েছে, যার মধ্যে ১২টিই নিয়েছেন পেসাররা। প্রথম ইনিংসে আড়াইশো পার না হতে পারা অস্ট্রেলিয়া, ফিল্ডিংয়ে নেমে দিন শেষ হওয়ার আগেই গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রোটিয়াদের টপ অর্ডারকেও।

অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং ধস ও স্মিথের রেকর্ড ফিফটি

লর্ডসে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের বোলারদের তোপে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২১২ রানেই গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। দলের দুই ওপেনার লাবুশানে ও উসমান খাজা শুরুতে দেখেশুনেই খেলতে থাকলেও, স্কোরবোর্ডে মাত্র ১২ রান যোগ হতেই ছন্দপতন হয়। প্রোটিয়াদের ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হন কাগিসো রাবাদা, যিনি রানের খাতা খোলার আগেই খাজাকে প্যাভিলিয়নে ফেরান। একই ওভারে তিনি বিদায় করেন ক্যামেরন গ্রিনকে। দলীয় ৪৬ রানে লাবুশানে (১৭ রান) বিদায় নেন এবং ট্র্যাভিস হেড করেন ১১ রান।

৬৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে যখন অজিরা দিশেহারা, তখন লাঞ্চের পর দলের হাল ধরেন স্টিভ স্মিথ ও ওয়েবস্টার। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৭৯ রান তোলার পর এইডেন মার্করামের শিকার হন স্মিথ। ৭৬ বলে ফিফটি পূর্ণ করার পর তিনি ৬৬ রানের ইনিংস খেলেন। ঐতিহাসিক লর্ডসে এটি ছিল তার ১৮তম অর্ধশতক, যা এই মাঠে সফরকারী কোনো দলের ব্যাটার হিসেবে সর্বোচ্চ। স্বদেশী কিংবদন্তি ডন ব্র্যাডম্যান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভিভ রিচার্ডসকে টপকে যান স্মিথ।

অজিদের প্রথম ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৭২ রানের ইনিংস খেলেন ওয়েবস্টার। ৯২ বলে ১১ চারে এই রান করে তিনিও রাবাদার শিকার হলে ২১২ রানের বেশি যেতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। বাকি ব্যাটসম্যানরা কেউই দুই অঙ্কের রানে পৌঁছাতে পারেননি।

প্রোটিয়াদের পক্ষে দুর্দান্ত বোলিং করে কাগিসো রাবাদা ৫১ রানে ৫টি উইকেট তুলে নেন। এছাড়া, মার্কো ইয়ানসেন পান ৩টি উইকেট এবং কেশভ মহারাজ ও এইডেন মার্করাম ১টি করে উইকেট তুলে নেন।

প্রোটিয়াদের ব্যাটিং বিপর্যয়

অস্ট্রেলিয়াকে অল্প রানে আটকে ফেলে অবশ্য দিন শেষে স্বস্তি পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। ইনিংসের শুরুতেই প্রতিপক্ষ শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন মিচেল স্টার্ক। প্রথম ওভারের শেষ বলেই মার্করামকে শূন্য রানে বিদায় করেন এই পেসার। এরপর দলীয় ১৯ ও ব্যক্তিগত ১৬ রানে আরেক ওপেনার রায়ান রিকেল্টনকেও প্যাভিলিয়নের পথ দেখান স্টার্ক। দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে প্রোটিয়ারা।

দিনের শেষ বিকেলে প্রোটিয়া শিবিরে আবারও আঘাত হানেন স্টার্ক। মুন্ডার ও স্টাবস যথাক্রমে ৩ ও ২ রানে আউট হন। দিন শেষে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ৩ ও ডেভিড বেডিংহ্যাম ৮ রানে অপরাজিত রয়েছেন। অজিদের পক্ষে জশ হ্যাজলউড ও প্যাট কামিন্স একটি করে উইকেট পান।

আগামীকাল ১৬৯ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করবে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই ম্যাচ আরও কত রোমাঞ্চ ছড়ায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।