৯০ লাখের বেশি কোরবানির চামড়া সংরক্ষণ সম্পন্ন, আসছে ট্যানারিতে
ঢাকা, ১২ জুন: এবারের ঈদুল আজহায় সংগৃহীত কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণে লবণ লাগানোর কাজ শেষ করেছেন আড়ত মালিকরা। ঢাকাসহ সারাদেশে ৯০ লাখেরও বেশি পিস চামড়া এভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এসব চামড়া এখন চূড়ান্ত প্রক্রিয়াকরণের জন্য সাভারের ট্যানারি পল্লীতে যাওয়ার অপেক্ষায়।
কয়েক দিনের মধ্যেই ট্যানারি কারখানার মালিকরা চামড়া সংগ্রহ শুরু করবেন। প্রাথমিকভাবে ঢাকার চামড়া কেনা হবে, এরপর পর্যায়ক্রমে ঢাকার বাইরের চামড়া সংগ্রহ করা হবে।
চামড়া সংগ্রহ ও দাম নিয়ে আলোচনা
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ জানিয়েছেন, পোস্তা ও আমিন বাজারসহ ঢাকার ভেতরের বিভিন্ন আড়তে থাকা চামড়াগুলোর কেনাকাটা আগামী ছয়-সাত দিনের মধ্যে শুরু হবে। দীর্ঘ ছুটির কারণে প্রক্রিয়াটি কিছুটা ধীরগতিতে চলবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সমতা লেদারের পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, লবণ লাগানোর পর চামড়া থেকে পানি সরে যেতে তিন-চার দিন সময় লাগে। তাই তারা প্রথমে ঢাকা শহরের চামড়াগুলো সংগ্রহ করবেন। তিনি আশা করছেন, আগামী শনি বা রোববার থেকে তাদের কর্মীরা বিভিন্ন হাট-ঘাটে যাওয়া শুরু করবেন।
এদিকে, সরকার কোরবানির পশুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। ঢাকায় গরুর চামড়ার সর্বনিম্ন দাম ১৩৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ১১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে ট্যানারি শিল্প মালিকরা বলছেন, তারা পিস হিসেবে নয়, ফুট হিসেবে চামড়া কিনবেন। তাদের মতে, চামড়ার গুণগত মান ঠিক থাকলে আড়ত মালিকরা সরকার নির্ধারিত দাম পাবেন।
শাহীন আহমেদ আরও বলেন, "আমরা পিস হিসেবে চামড়া কিনবো না। আমরা ফুট মেপে স্কয়ার ফিট হিসেবে ঢাকার চামড়া ৬০ থেকে ৬৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৫০ থেকে ৫৫ টাকার মধ্যে লবণযুক্ত চামড়া কিনবো।" তিনি মনে করেন, সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছে, তা কিছুটা বেশি। ছোট চামড়ার দাম ১৩৫০ টাকা নির্ধারিত হলেও, তারা স্কয়ার ফিট হিসেবে গণনা করে চামড়া কিনবেন।
লাম্পি স্কিন ডিজিজ ও মান নিয়ে উদ্বেগ
মিজানুর রহমান আশঙ্কা করছেন যে, এই বছর ১৫ থেকে ২০ শতাংশ চামড়া লাম্পি স্কিন ডিজিজে (LSD) আক্রান্ত। যেহেতু কোরবানি সম্পন্ন হয়েছে এবং চামড়াগুলো লবণীভূত হয়ে গেছে, তাই এই চামড়াগুলোর গুণগত মান অনেক কম এবং এগুলো কোনো অবস্থাতেই রপ্তানিযোগ্য নয়। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, লবণযুক্ত চামড়ার পেশাদার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের কেনাকাটায় খুব একটা সমস্যা হবে না এবং তারা সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া সংগ্রহ করতে পারবেন।