হরমুজ প্রণালী বন্ধের কথা ভাবছে ইরান: বিশ্বজুড়ে তেল সরবরাহে তীব্র বিঘ্ন ও যুদ্ধের শঙ্কা
তেহরান, শনিবার (১৪ জুন): পারস্য উপসাগরে প্রবেশের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ পথ হরমুজ প্রণালী বন্ধের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে ইরান। দেশটির পার্লামেন্টের নিরাপত্তা বিষয়ক সদস্য ইসমাইল কোসারির বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম এই তথ্য জানিয়েছে, খবর দিয়েছে আল জাজিরা।
ওমান ও ইরানের মধ্যে অবস্থিত হরমুজ প্রণালী বিশ্বের তেল পরিবহনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুট। যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই প্রণালী বন্ধ হলে বিশ্বব্যাপী তেলের দামে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে।
বিশ্ব অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাবের আশঙ্কা
যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এড হিরস বলেছেন, এই রুট দিয়ে বিশ্বের মোট তেলের ২০ শতাংশ পরিবহন করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ১৮ থেকে ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল এই পথ দিয়ে পারাপার হয়। তার মতে, যদি এই পথে পরিবহনের পরিমাণ কমে যায়, তবে বিশ্ববাজারে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১২০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে, সৌদি আরব ও কুয়েতের জন্য এই প্রণালী ছাড়া তেল রপ্তানির কোনো সহজ বিকল্প পথ নেই।
এড হিরস আরও সতর্ক করে বলেছেন, হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়া হলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এটিকে ইরানকে আক্রমণ করার একটি অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, তেলের প্রবাহ বন্ধ করা হলে তা বিশ্ব অর্থনীতি এবং মার্কিন অর্থনীতির ওপর সরাসরি আক্রমণ হিসেবে বিবেচিত হবে।
ইসরায়েলের হামলার প্রতিশোধ হিসেবে বন্ধের ইঙ্গিত
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির সিনিয়র ফেলো সিনা তুসি মনে করেন, ইসরায়েল যদি ইরানের তেল ও জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর আরও আক্রমণ চালায়, তাহলে ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, ইসরায়েল সম্প্রতি দক্ষিণ ইরানের একটি গ্যাসক্ষেত্রে হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি, ইসরায়েলের হাইফার কিছু জ্বালানি স্থাপনায় ইরান পাল্টা হামলা চালিয়েছে বলেও জানা গেছে। এই ধরনের হামলা বৃদ্ধি পেলে তা পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর জন্য একটি সম্ভাব্য হুমকির কারণ হতে পারে, যা হরমুজ প্রণালী বন্ধের সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে দেবে।