ইরানি হামলায় ইসরায়েলিদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকট: হটলাইনে হাজারো ফোন, বিনামূল্যে সেবা
তেল আবিব, ১৬ জুন: ইরানের মুহুর্মুহু ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলিদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ও মানসিক বিপর্যস্ততা দেখা দিয়েছে। এই লাগাতার হামলার জেরে বাসিন্দারা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। গত চার দিনে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা হটলাইনে সাড়ে ৪ হাজারেরও বেশি ফোনকল করা হয়েছে। এমনকি জুম মিটিংয়ের মাধ্যমেও বিপর্যস্ত ইসরায়েলিরা মানসিক চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হচ্ছেন।
ভীতিকর পরিস্থিতি, ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে বহু মানুষ
ইসরায়েলিরা চোখের সামনে এক অবাস্তব ও ধ্বংসপ্রাপ্ত নগরী দেখছেন। ধসে পড়া ভবন, ভাঙা রাস্তা এবং সড়কে অ্যাম্বুলেন্সের অনবরত শব্দে তারা যেন এক ঘোরের মাঝে বসবাস করছেন। নিজ বাড়ি ছেড়ে বহু মানুষের এখন ঠাঁই হয়েছে স্থানীয় বম্ব শেল্টারে (বোমা আশ্রয়কেন্দ্রে)।
এক ইসরায়েলি নাগরিক তার হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, "এটা আমার প্রথম বাড়ি। তিন দশকের বেশি সময় ধরে পরিবার নিয়ে এখানে ছিলাম। কিন্তু এমনটা কেন করলো? আমার বাড়ি কেন ধ্বংস করে দিলো? আমরা কী করেছি? আমি এখনও একবারের জন্যও কাঁদিনি। অনেক বড় ধাক্কা খেয়েছি।"
মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি, প্রশাসনের বিশেষ উদ্যোগ
ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার 'ওয়েভে'র (ঢেউ) সাথে যুক্ত হয়েছে নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির 'ওয়েভ'। তেহরান-তেল আবিবের মধ্যে মাত্র চার দিনের হামলার জেরে ইসরায়েলিরা এখন পাগলপ্রায় অবস্থায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর দ্বারস্থ হচ্ছেন। দিনে-রাতে ইমোশনাল সাপোর্ট হটলাইনে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি ফোনকল গিয়েছে।
স্থানীয় মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও লাগাতার ফোন বেজে চলেছে। জনগণের সুবিধার্থে এসব কেন্দ্রের কার্যক্রম ২৪ ঘণ্টা চালু রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হামলায় আক্রান্ত এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের বাড়তি খোঁজখবর নিচ্ছে প্রশাসন।
শুধু তাই নয়, এই দুর্যোগের মাঝেই জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে মানসিক চিকিৎসকের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। পিটিএসডি (পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস সিন্ড্রোম)-এর প্রভাব থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা দিতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আরেক ইসরায়েলি নাগরিক বলেন, "এভাবে চলতে পারে না। পুরো ব্যাপারটার একটা শেষ হওয়া উচিত। যেকোনো কিছুর বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, ইরানসহ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে এমন অস্থিরতা আর না।"