ঢাকা | বঙ্গাব্দ

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আব্দুস সাত্তার কারাগারে

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jun 16, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:

যবিপ্রবির সাবেক ভিসি ড. আব্দুস সাত্তার কারাগারে, দুদকের মামলায় আদালতের নির্দেশ

যশোর, ১৬ জুন: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুস সাত্তারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার (১৬ জুন) দুপুরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা স্পেশাল জজ শেখ নাজমুল আলম এই আদেশ দেন।


জামিন নামঞ্জুর, অপর দুই আসামি জামিনে

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) সিরাজুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সোমবার এই মামলার নির্ধারিত তারিখে ড. আব্দুস সাত্তার আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানান। তবে বিচারক তার আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এই মামলার অপর দুই আসামি - যবিপ্রবির উপপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) আব্দুর রউফ এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক উপ-উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন - বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। এর আগে, এই তিন আসামির বিরুদ্ধেই আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন।


অবৈধ নিয়োগ ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

আদালত সূত্রে জানা গেছে, অবৈধভাবে নিয়োগ এবং সরকারি ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন দুদকের তৎকালীন যশোর উপ-পরিচালক আল-আমিন। মামলার তদন্ত শেষে সম্প্রতি উল্লিখিতদের অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদক।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে আবেদন করেছিলেন আসামি আব্দুর রউফ। এই নিয়োগের জন্য গঠিত তিন সদস্য বিশিষ্ট বাছাই বোর্ডের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তৎকালীন উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তার। বাছাই বোর্ডের আরেক সদস্য ছিলেন ইবির উপ-উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন। ২০০৯ সালের ২২ আগস্ট মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হলেও, সেখানে উপস্থিত অন্য তিন প্রার্থীর কাউকেই পাস করানো হয়নি।

বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুযায়ী, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কর্মকর্তা হিসেবে আব্দুর রউফের কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও বাছাই বোর্ড তাকে অবৈধভাবে প্রথমে সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগের চেষ্টা করে। পরে অভিজ্ঞতার ঘাটতি বিবেচনায় নিয়ে তাকে সেকশন অফিসার (গ্রেড-১, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।


রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্তে বিতর্কিত নিয়োগ ও আর্থিক অনিয়ম

রিজেন্ট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে সাবেক ভিসি ড. আব্দুস সাত্তার কোনো উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই তাকে সেকশন অফিসার হিসেবে নিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। আব্দুর রউফ সেকশন অফিসার পদে অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়ে কর্মরত থাকা অবস্থায় সিলেকশন গ্রেডসহ বিভিন্ন সুবিধা লাভ করেন এবং বিভাগীয় প্রার্থীর সুবিধা নিয়ে ২০১৪ সালে সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে এবং ২০২১ সালে উপপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন।

মামলায় বলা হয়েছে, এই অবৈধ নিয়োগের কারণে ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত আব্দুর রউফ বেতন-ভাতাবাবদ মোট ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩২ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

উল্লেখ্য, এর আগেও অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক দুই ভিসি আব্দুস সাত্তার ও আনোয়ার হোসেনসহ চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের আরও একটি মামলা চলমান রয়েছে।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স