ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ইরানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ চাই: ট্রাম্প

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jun 18, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ট্রাম্পের নতুন হুমকি: খামেনির অবস্থান শনাক্তের দাবি, 'নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ' না হলে হামলার তীব্রতা বৃদ্ধির হুঁশিয়ারি

ওয়াশিংটন ডি.সি., ১৭ জুন: ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে দফায় দফায় হামলা চলছেই, আর এই পরিস্থিতিতে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধে প্রবেশের গুঞ্জন ক্রমেই জোরালো হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন যে, ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আল খামেনির অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। একইসাথে তিনি এও দাবি করেছেন যে, ইরানের আকাশসীমা এখন সম্পূর্ণরূপে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) ট্রাম্প আরও জানিয়েছেন, ইরানকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে হবে, অন্যথায় হামলা আরও তীব্রতর হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

এর আগের দুটি বার্তায় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, 'ইরানের আকাশসীমা এখন পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে' এবং ইরানের সর্বোচ্চ নেতার অবস্থান সম্পর্কে জানার কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন, 'আমরা তাকে হত্যা করব না—অন্তত এখনই নয়।'


যুক্তরাষ্ট্রের হাতে 'ম্যাসিভ অর্ডিন্যান্স পেনেট্রেটর': ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনা কি লক্ষ্য?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত জড়াবে কি না, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। কারণ দেশটির হাতে এমন একটি ৩০,০০০ পাউন্ড (১৩,৬০০ কেজি) ওজনের অস্ত্র রয়েছে, যা ইরানের সবচেয়ে গোপন ও মূল্যবান পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করতে সক্ষম। এই স্থাপনাটি ফোর্দো নামক স্থানে একটি পাহাড়ের ৯০ মিটার (২৯৫ ফুট) নিচে চাপা দিয়ে রাখা হয়েছে।

এই অস্ত্রটির পূর্ণ নাম জিবিইউ-৫৭ এমওপি, যার অর্থ 'ম্যাসিভ অর্ডিন্যান্স পেনেট্রেটর'। এটি ৬১ মিটার গভীরে অবস্থিত লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে সক্ষম—অথবা বারবার আঘাত করে আরও গভীরে প্রবেশ করতে পারে। উল্লেখ্য, এই বিশাল ও শক্তিশালী অস্ত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে থাকলেও ইসরায়েলের কাছে নেই।

এই বিশাল (তবে পরমাণু-ব নয়) বোমা বহনে সক্ষম প্রায় একমাত্র বিমান হলো মার্কিন বিমান বাহিনীর বি-২ স্পিরিট বোমারু বিমান, যা একবারে দুটি করে এমওপি বহন করতে পারে। বর্তমানে এই বিমানগুলো ডিয়েগো গার্সিয়া নামক ভারত মহাসাগরের মার্কিন-ব্রিটিশ ঘাঁটিতে মোতায়েন আছে বলে ধারণা করা হয়। এই ঘাঁটি ইরান থেকে ২,৩৫৮ মাইল (৩,৭৯৬ কিমি) দূরে অবস্থিত, যা বি-২ বোমারু বিমানের পাল্লার মধ্যেই পড়ে।

এছাড়াও, 'ইউএসএস নিমিৎজ' বিমানবাহী রণতরীর নেতৃত্বে একটি মার্কিন নৌ-স্ট্রাইক গ্রুপও এই অঞ্চলের দিকে এগিয়ে আসছে।


ফোর্দো কি যুদ্ধের ময়দানে আসবে?

বিশ্লেষকদের ধারণা, ইসরায়েল যদি ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সক্ষমতা ধ্বংস করতে চায়, তাহলে ফোর্দোকে যুদ্ধের ময়দানে আনতেই হবে। বিমান হামলা দিয়ে ইসরায়েলের পক্ষে সেটি সম্ভব নয়, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পারবে—যদি তারা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। ইসরায়েলি কমান্ডো অভিযান একটি বিকল্প হলেও, তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

বর্তমানে, অনেকেই এই অঞ্চলে মার্কিন সামরিক সম্প্রসারণ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রশ্ন তুলছে: এটি কি তেহরানকে চাপ দিয়ে কোনো চুক্তিতে আনার একটি কূটনৈতিক কৌশল বা ব্লাফ, নাকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের যুদ্ধবিরোধিতা সত্ত্বেও আমেরিকা এই লড়াইয়ে যোগ দিতে যাচ্ছে? এসব প্রশ্নের উত্তর একমাত্র সময়ই বলে দেবে।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স