যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হওয়ার পর তেহরান যখন মিত্র রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে সরাসরি সহায়তার প্রত্যাশা করছে, ঠিক তখনই রাশিয়ার নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে নানা আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই অবস্থানের পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।
পুতিন জানান, ইরানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাশিয়া নিরপেক্ষ থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি জানান, এর অন্যতম কারণ হলো ইসরায়েলে বসবাসরত বিশাল রুশভাষী জনগোষ্ঠী।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, ইসরায়েলে বর্তমানে প্রায় ২০ লাখ রুশভাষী মানুষ বসবাস করেন। ইসরায়েল কার্যত রুশভাষীদের জন্য দ্বিতীয় বাড়িতে পরিণত হয়েছে। তাই রাশিয়া তার ইতিহাস ও জনগণের কথা বিবেচনা করেই মধ্যপ্রাচ্যের সংকটে অবস্থান নেয়।
তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ মুসলিম এবং দেশটি ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) একজন পর্যবেক্ষক সদস্য। ফলে ইরানসহ মুসলিম বিশ্বের বিষয়েও মস্কো গভীর মনোযোগ দেয়।
এদিকে, চলমান উত্তেজনার সূচনা হয় গত ১৩ জুন। ওইদিন ইসরায়েল ইরানের একটি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এরপর পাল্টা জবাব দেয় তেহরান। সর্বশেষ গত শনিবার (২১ জুন) যুক্তরাষ্ট্র ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ চালিয়ে ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় ১৪ হাজার কেজি ওজনের বাঙ্কার-বাস্টার বোমা নিক্ষেপ করে।
এই হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, ইরানের মূল পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের অসাধারণ এক সামরিক সাফল্য।
এরপরই ইরান একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলের দিকে পাল্টা জবাব দেয়। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানান, ইরান প্রতিশোধের পথেই আছে এবং এরপর আলোচনার পথ খুলে দেবে। তিনি বলেন, আলোচনার টেবিলে তো ইরানই ছিল, বরং যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সেই সুযোগ নষ্ট করেছে।