দেশে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে গুগলের ডিজিটাল লেনদেন সেবা ‘গুগল ওয়ালেট’, যা সাধারণত ‘গুগল পে’ নামে পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক তিন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান — গুগল, মাস্টারকার্ড ও ভিসার সহযোগিতায় দেশের বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক এই সেবা শুরু করেছে।
বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে গুগল পে সেবা চালু রয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের গ্রাহকরাও এখন সহজে গুগল পের মাধ্যমে ডিজিটাল লেনদেন করতে পারছেন। এতে আলাদা করে ব্যাংকের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে হয় না, হাতে থাকা স্মার্টফোনই হয়ে দাঁড়ায় ডিজিটাল ওয়ালেট, যা দিয়ে কেনাকাটা করা যায় খুব সহজেই।
বর্তমানে সিটি ব্যাংকের মাস্টারকার্ড ও ভিসা কার্ডধারীরা গুগল পে ব্যবহার করতে পারছেন। সিটি ব্যাংক জানিয়েছে, তাদের গ্রাহকদের যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে গুগল পে অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে এবং ফোনে এনএফসি (নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন) প্রযুক্তি থাকতে হবে, যা অধিকাংশ স্মার্টফোনে থাকে।
অ্যাপ ডাউনলোডের পর ‘অ্যাড পেমেন্ট মেথড’ অপশনে গিয়ে ভিসা বা মাস্টারকার্ড যুক্ত করতে হবে। ছবি তুলে বা কার্ডের তথ্য দিয়ে সহজেই কার্ড অ্যাপে সংযুক্ত করা যায়। দোকান কিংবা সেবা কেন্দ্রগুলোতে থাকা ‘পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস)’ যন্ত্রে এনএফসি প্রযুক্তির মাধ্যমে গুগল পে ব্যবহার করে লেনদেন করা সম্ভব। পাঁচ হাজার টাকার নিচে লেনদেনে পাসওয়ার্ড দিতে হয় না, তবে বড় অঙ্কের লেনদেনে পাসওয়ার্ড বাধ্যতামূলক। শুধু ফোন থেকে ‘স্ক্রিন লক’ খুলে পিওএস যন্ত্রের কাছে নিলেই লেনদেন সম্পন্ন হবে।
সিটি ব্যাংকের রয়েছে ভিসা, মাস্টারকার্ড ও অ্যামেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) এই তিন ব্র্যান্ডের কার্ড। ব্যাংকের ডেবিট কার্ডের সংখ্যা ১২ লাখ এবং ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা সাড়ে ৪ লাখ, যার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ভিসা ও মাস্টারকার্ডের। শিগগিরই অ্যামেক্স কার্ডধারীদের জন্যও এই সেবা চালু করার কাজ চলছে।
দেশজুড়ে সিটি ব্যাংকের ৩৫ হাজার পিওএস রয়েছে, যার মধ্যে ৩২ হাজার এনএফসি প্রযুক্তিসংবলিত। এছাড়া অন্যান্য ব্যাংকের পিওএস যন্ত্রেও গুগল পের মাধ্যমে লেনদেন করা যাবে। গুগল পে ব্যবহারে গ্রাহকদের কোনো অতিরিক্ত খরচ হবে না। যারা অনুমোদিত কার্ডধারী, তারা গুগল পের মাধ্যমে বিদেশেও ডলার দিয়ে পেমেন্ট করতে পারবেন।
সিটি ব্যাংক জানায়, গুগল পেতে উন্নত ‘এনক্রিপশন’ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা গ্রাহকের তথ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।