ঢাকা | বঙ্গাব্দ

মব জাস্টিসের নামে হিংস্র উন্মাদনা মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে: তারেক রহমান

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jun 25, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘মব জাস্টিস’ বা বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এখন এক ভয়ংকর হিংস্র উন্মাদনায় রূপ নিয়েছে, যা মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বিকাশের পরিবেশকে বিপন্ন করছে। যাতে দেশে একনায়কতন্ত্র বা একমাত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা আবার ফিরে না আসে, সেজন্য গণতন্ত্রকে আরও গতিশীল ও ধারাবাহিক রাখতে হবে।

বুধবার (২৫ জুন) জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতনবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

তারেক রহমান বলেন, মানবতা, ন্যায়বিচার, আইনের শাসন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ঐতিহ্য আমাদের গড়ে তুলতে হবে। এজন্য গণতন্ত্রকামী শক্তির মধ্যে ঐক্য অত্যন্ত জরুরি।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বজুড়ে রক্তাক্ত সংঘাত, সহিংসতা এবং হানাহানি অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে কোটি কোটি মানুষ নিহত, আহত বা পঙ্গু হচ্ছেন। স্বৈরশাসকরা বিরোধীদের দমন-পীড়নে সীমা ছাড়িয়ে গেছে। অনেক দেশে নাগরিকদের জীবন-সম্পদ আজ মারাত্মক হুমকির মুখে। একনায়কদের রক্তচক্ষুর কারণে বিরোধী মতের মানুষকে গুম, খুন ও মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর কারাবন্দি থাকতে হচ্ছে।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনে বাংলাদেশ এক সর্বগ্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল। নাগরিক স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা—সবকিছু দমন করা হয়েছিল। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করে রাখা হয়েছিল, তার সুচিকিৎসাও বর্বরভাবে বাধাগ্রস্ত করা হয়েছিল। পুরো দেশকে বাকরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল, মানুষ ভীতির মধ্যে জীবন কাটিয়েছে।

তারেক রহমান আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে দমন চালানো হতো। বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে ওঠায় নারী-শিশুসহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ছিল মারাত্মক হুমকির মুখে। তিনি বলেন, শুধুমাত্র একটি গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাই মানুষের সার্বিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারে। যদিও আমরা ফ্যাসিবাদের শৃঙ্খল ভাঙতে পেরেছি, তবে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠান ও এর সুষ্ঠু চর্চা এখনও শুরু হয়নি।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত নির্যাতনবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি বছর ২৬ জুন এ দিবস পালিত হয়, যার মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সংহতি প্রকাশ করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বব্যাপী উপনিবেশবাদ থেকে মুক্তি এলেও সহিংসতা ও নিপীড়ন থামেনি।

তারেক রহমান বলেন, নির্যাতনের শিকারদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বৈশ্বিক ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। বিশ্বের সকল গণতন্ত্রকামী ও মানবিকবোধসম্পন্ন মানুষদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমেই বর্বর নির্যাতনকারী ও স্বৈরশাসকদের পরাজিত করা সম্ভব।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স