আপনি কি দেশের বাইরে আছেন? সেখান থেকে আয় করছেন বা কোনো ধরনের সরকারি ভাতা পাচ্ছেন? তাহলে ভালো খবর হলো—বাংলাদেশ সরকার বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠালে আপনাকে দিচ্ছে নগদ আর্থিক প্রণোদনা। ১০০ ডলার পাঠালেই মিলছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ হারে অতিরিক্ত টাকা।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বর্তমানে প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসাবে দেশে টাকা পাঠালে ১০০ ডলারে আত্মীয়স্বজন পাচ্ছেন ১২ হাজার ৩০০ টাকা। সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত মিলছে আরও ৩০৭ টাকা ৫০ পয়সা।
কিভাবে টাকা পাঠাবেন:
আপনি যে দেশেই থাকুন না কেন, সেখান থেকে স্থানীয় মুদ্রায় আয় পাঠালে তা ডলারে রূপান্তর হয়ে দেশে আসে। বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহার করলেই এই সুবিধা মিলবে। যদি অবৈধ বা হুন্ডির মাধ্যমে পাঠান, তাহলে কোনো প্রণোদনা পাবেন না। তাই প্রবাসী আয় পাঠানোর ক্ষেত্রে বৈধ পথ বেছে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সরকার।
টাকা তুলতে কী লাগবে:
বাংলাদেশে প্রবাসী আয়ের টাকা তুলতে ব্যাংক হিসাব থাকলেও কিংবা না থাকলেও সমস্যা নেই। যারা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন, তারা সরাসরি সেই হিসাবে টাকা পেতে পারেন। আর যারা অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন না, তারা পিন নম্বরের মাধ্যমে টাকা তুলতে পারেন। ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানি গ্রামসহ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে টাকা পাঠানোর সময় যে পিন নম্বর আসে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা এনজিওতে গেলেই টাকা পাওয়া যায়। সঙ্গে সরকারের অতিরিক্ত দেওয়া প্রণোদনার টাকাও মিলবে।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা:
বিকাশ, রকেট বা নগদের মাধ্যমেও সরাসরি প্রবাসী আয় গ্রহণ করা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যাংক হিসাব লাগে না। সাধারণত ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই টাকা পৌঁছে যায়।
কেন বেড়েছে প্রবাসী আয়:
গত এক বছর ধরে বৈধ পথে আগের তুলনায় বেশি প্রবাসী আয় আসছে। কারণ অর্থ পাচার কমেছে এবং টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ হয়েছে। তাই প্রবাসীরা তাদের আয় বৈধ পথে পাঠাচ্ছেন।
সর্বশেষ রেমিট্যান্সের চিত্র:
২০২৪ সালের জুনের প্রথম ২১ দিনে ১৯৮ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। গত বছরের একই সময়ে এ আয় ছিল ১৯১ কোটি ডলার। অর্থাৎ এ সময়ে ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত ১১ মাসে দেশে মোট ২ হাজার ৯৫০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ২ হাজার ৩২৯ কোটি ডলার। অর্থাৎ, এ সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ।
ডলারের সংকট কমেছে:
প্রবাসী আয় বাড়ায় ব্যাংকিং খাতে ডলারের সংকট অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত সর্বোচ্চ দর, অর্থাৎ ১২৩ টাকার মধ্যেই ব্যাংকগুলো প্রবাসী আয় কিনছে। ডলারের বাজারও স্থিতিশীল হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।