ঢাকা | বঙ্গাব্দ

অভিযানেও কমছে না চালের দাম, অভিযোগের তীর মিল মালিকদের দিকে

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jun 28, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:

চালের বাজারে অস্থিরতা আরও ঘনীভূত হচ্ছে, যা চিন্তায় ফেলেছে নীতি নির্ধারকদের। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হলেও এর সরাসরি সুফল ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছায়নি। ধানের উচ্চ মূল্যের অজুহাত দেখিয়ে প্রতিনিয়ত চালের দাম বাড়ানো হচ্ছে, অথচ বাস্তবে এখন কৃষকের ঘরে ধান নেই।

রাজধানীর বাজারে গত ১৫ দিনের ব্যবধানে মিনিকেট চালের প্রতি বস্তায় দাম বেড়েছে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। একই সময় বিআর-২৮ এবং পাইজাম চালের দাম বেড়েছে ২০০ টাকা পর্যন্ত। দোকানিরা অভিযোগ করছেন, মিল মালিকরা অস্বাভাবিক মুনাফা করছে, যা পুরো বাজার ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

বাংলাদেশে বছরে মোট চালের চাহিদা প্রায় ৩ কোটি ৮০ থেকে ৯০ লাখ টন। এর মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ আসে বোরো মৌসুমের উৎপাদন থেকে, বাকিটা আমন ও আউশ মৌসুমে। মাত্র দেড় মাস আগেই কৃষক বোরো ধান ঘরে তুলেছেন। ফলে সাধারণত এই সময় চালের দাম স্বাভাবিক থাকার কথা। কিন্তু এবার বাম্পার ফলনের পরও চালের বাজারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

ঈদুল আজহার পর গত দুই সপ্তাহে মিনিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের চিকন, মাঝারি ও মোটা চালের দাম কেজিতে ৬ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ভরা মৌসুমে এমন দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

বাজারে এখন এক কেজি মিনিকেটের দাম ৮০-৯০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। মাঝারি মানের চালের দাম ৬০-৬৫ টাকার নিচে নামছে না। খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, মূলত মিল মালিক এবং কিছু কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে বাড়তি মুনাফা নিচ্ছে।

চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর এবং জেলা খাদ্য বিভাগ গত বৃহস্পতিবার থেকে অভিযান শুরু করেছে। তবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এসব অভিযান কাঙ্ক্ষিত সুফল দিচ্ছে না। তারা মিলগেট ও গুদাম পর্যায়ে পর্যাপ্ত নজরদারির অভাবকে দায়ী করছেন।

নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সভাপতি ফারুক হোসেন চকদার বলেন, “চালের কিছু মাল নষ্ট হওয়ার কারণে গত এক মাসে চালের দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। আবার ঈদের ছুটিতে উৎপাদনও কিছুদিন বন্ধ ছিল। তবে আশা করছি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।”

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে বিভিন্ন ধরনের চিকন ও মাঝারি মানের চালের দাম ৭ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। বাজারের এই অস্থিরতা কতদিন স্থায়ী হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছেন ভোক্তারা।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স