ঢাকা | বঙ্গাব্দ

সমগ্র ইউক্রেন চান পুতিন: আল জাজিরা

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jun 28, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:

ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা চলতি বছরে দেশটিকে বাড়তি সামরিক সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য না থাকার ঘাটতি কিছুটা পূরণ করছে। অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আবারও ইউক্রেনের পুরো অঞ্চলকে রাশিয়ান ফেডারেশনের অংশ করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন।

ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ ২৪-২৫ জুন হেগেতে অনুষ্ঠিত জোটের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের আগে জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডা চলতি বছরে ইউক্রেনকে মোট ৩৫ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গত বছর পুরো বছর এটি ছিল ৫০ বিলিয়নের কিছু বেশি, আর এখন মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই সহায়তার পরিমাণ ৩৫ বিলিয়নে পৌঁছেছে, যা কিছু বিশ্লেষকের মতে ৪০ বিলিয়নের কাছাকাছি।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউরোপীয় এই অতিরিক্ত সহায়তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে সামরিক সাহায্যের ঘাটতি পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্যাট্রিয়ট মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনতে চেয়েছিলেন, যা রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে সক্ষম। তবে মে মাসে ট্রাম্প প্রশাসন প্রথমবারের মতো ইউক্রেনকে অস্ত্র বিক্রি শুরু করে।

রাশিয়া ইউক্রেনের মিত্রদের কাছ থেকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার শর্তে যুদ্ধবিরতির দাবি করেছে। শনিবার (২৮ জুন) ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এই দাবিটি পুনর্ব্যক্ত করেন। এর আগে, ২০ জুন পুতিন প্রকাশ্যে বলেন, সমগ্র ইউক্রেন দখলের তার উচ্চাকাঙ্ক্ষা কমেনি।

সেন্ট পিটার্সবার্গ ইকোনমিক ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুতিন বলেন, “আমি বহুবার বলেছি, রাশিয়ান ও ইউক্রেনীয় জনগণ আসলে এক জাতি। এই অর্থে, সমগ্র ইউক্রেন আমাদের। আমাদের একটি পুরনো প্রবাদ আছে — যেখানে রাশিয়ান সৈন্য পা রাখে, সেটাই আমাদের।”

এরপরের দিন ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেন, “রাশিয়ান সৈন্য যেখানেই পা রাখে, সেখানে শুধু মৃত্যু, ধ্বংস ও বিপর্যয় নিয়ে আসে।”

২১ জুন জেলেনস্কি টেলিগ্রামে লিখেছেন, “পুতিনের বক্তব্য সম্পূর্ণ স্পষ্ট — তিনি সমগ্র ইউক্রেন চান। পাশাপাশি বেলারুশ, বাল্টিক রাষ্ট্র, মলদোভা, ককেশাস ও কাজাখস্তানের মতো দেশগুলোর কথাও বলেছেন।”

জার্মান সেনাবাহিনীর পরিকল্পনাকারীরা পুতিনের সম্প্রসারণবাদকে হুঁশিয়ারি হিসেবে দেখছেন। ১৮ মাস ধরে প্রস্তুত করা একটি গোপন কৌশলপত্রে তারা রাশিয়াকে ‘অস্তিত্বের হুমকি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা সম্প্রতি ‘ডার স্পিগেল’ পত্রিকায় ফাঁস হয়েছে।

নথিতে বলা হয়েছে, “মস্কো ২০৩০ সালের মধ্যে ন্যাটোর বিরুদ্ধে বড় ধরনের যুদ্ধের জন্য তাদের সামরিক নেতৃত্ব ও প্রতিরক্ষা শিল্পকে প্রস্তুত করছে।”

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মেরৎজ গত ২৪ জুন বলেন, “আমরা বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোর রাশিয়া সংক্রান্ত সতর্কতাকে দীর্ঘদিন অবহেলা করেছি। আমরা সেই ভুল স্বীকার করছি। এই বাস্তবতা থেকে পালানোর উপায় নেই। আশেপাশের বিশ্ব শীঘ্রই শান্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে না।”


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স