ইসরায়েলের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো সাহায্যের মধ্যে মাদক বড়ি পাওয়ার অভিযোগ তুলেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (২৭ জুন) এ তথ্য জানায় গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সি।
বিবৃতিতে গাজার মিডিয়া অফিস জানায়, মার্কিন তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সাহায্য বিতরণ কেন্দ্র থেকে ফিলিস্তিনিদের হাতে আসা আটার বস্তার ভেতর পাওয়া গেছে প্রেসক্রিপশনযুক্ত শক্তিশালী ব্যথানাশক ওষুধ অক্সিকোডোন।
তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে জানায়, এসব বড়ি ইচ্ছাকৃতভাবে আটার সঙ্গে গুঁড়ো করে বা মিশিয়ে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে, যা সরাসরি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই 'নৃশংস অপরাধের' জন্য পুরোপুরি দায়ী ইসরায়েল। ফিলিস্তিনিদের সমাজে পরিকল্পিতভাবে মাদক ছড়িয়ে দিয়ে তাদের ভেতর থেকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে তারা।
এ ঘটনাকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের চলমান গণহত্যার অংশ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়, ইসরায়েল মাদককে ‘নরম অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে। এটি বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে চালানো এক ধরনের নোংরা যুদ্ধের কৌশল।
এদিকে, ইসরায়েল গাজার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে চারটি নতুন সাহায্য বিতরণ কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমের দাবি, এসব কেন্দ্রের উদ্দেশ্য হচ্ছে, উত্তরের ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণে সরিয়ে নেওয়া।
তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘ এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছে। তাদের মতে, এটি জাতিসংঘের মাধ্যমে পরিচালিত সাহায্য বিতরণের স্বচ্ছ প্রক্রিয়া এড়ানোর কৌশল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সাহায্য কেন্দ্র ও জাতিসংঘের খাদ্যবাহী ট্রাকের আশেপাশে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৪ হাজারের বেশি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে গাজায় বর্বর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৬ হাজার ৩০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
এরই মধ্যে, গত নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।