তিন সপ্তাহ বিরতির পর আবারও তেল আবিবের ‘হোস্টেজ স্কোয়ার’ ও ‘বেগিন রোড’ জুড়ে বিক্ষোভে উত্তাল হলো ইসরায়েল। শনিবার (২৮ জুন) রাতে হাজার হাজার মানুষ সেখানে জড়ো হয়ে বন্দিমুক্তি চুক্তির পক্ষে এবং যুদ্ধ ব্যবস্থাপনায় নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
সম্প্রতি আলোচনা চলছে, জেরুজালেম ও ওয়াশিংটনের সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং অবশিষ্ট ৫০ জন ইসরায়েলি বন্দিকে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে ইসরায়েলি সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত আসেনি।
এর আগের দিন, শুক্রবার (২৭ জুন) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, ‘আগামী সপ্তাহের মধ্যেই’ যুদ্ধবিরতি হতে পারে।
জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে চলা অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির সময় হামাসের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়া পাঁচ ইসরায়েলির মধ্যে একজন, লিরি আলবাগ ওই বিক্ষোভে উপস্থিত থেকে প্রায় ২ হাজার মানুষের সামনে এক আবেগঘন বক্তব্য দেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আহ্বান জানান, যেভাবে তিনি ইরানের বিরুদ্ধে ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’ নিয়েছিলেন, ঠিক সেভাবেই যেন তিনি গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে বাকি বন্দিদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সাহসী পদক্ষেপ নেন।
আলবাগ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘গত দুই সপ্তাহ ধরে সবকিছু ইরানকে ঘিরে। অথচ আমার ভাই-বোনেরা, যারা এখনো বন্দি, তাদের বিষয়টি যেন আড়ালে পড়ে গেছে।’’ তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি ইসরায়েল-ইরানের ১২ দিনের যুদ্ধ, যা গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হয়।
বন্দি অবস্থায় তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জানান, ফিলিস্তিনিদের পোশাক পরিয়ে তাকে গাজার রাস্তায় হাঁটানো হয়েছিল। পরে আরও পাঁচ নারী ও কিশোরীর সঙ্গে তাকে একটি ছোট, অন্ধকার আন্ডারগ্রাউন্ড খাঁচায় আটকে রাখা হয়, যেখানে নড়াচড়ারও সুযোগ ছিল না।
আলবাগ বলেন, ‘‘আমাদের দিনে এক চতুর্থাংশ রুটি, একটি খেজুর আর আধা বাটি ভাত দেয়া হতো। প্রতিটি মুহূর্ত ছিল একেকটি দীর্ঘ যন্ত্রণার মতো।’’
নিজ বক্তব্যে তিনি নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পকে সরাসরি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘‘আপনারা ইরানের বিরুদ্ধে যে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এবার সেই একই সাহস দেখান। গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করুন এবং আমাদের সবাইকে ঘরে ফিরিয়ে আনুন। কারণ এটা আমাদের জাতীয় নৈতিক দায়িত্ব।’’