বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় চ্যাটজিপিটি। বিভিন্ন বিষয়ে ব্যবহারকারীদের সঙ্গে অর্থবহ, প্রাসঙ্গিক ও প্রেক্ষাপটভিত্তিক কথোপকথন করতে সক্ষম এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। তবে এর ব্যবহার সুবিধাজনক হলেও, এর পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চ্যাটজিপিটি বা এ ধরনের বড় এআই মডেল প্রশিক্ষণ ও পরিচালনার জন্য বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ ও পানি প্রয়োজন হয়। এতে কার্বন নিঃসরণ বাড়ে এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে।
এক গবেষণা বলছে, শুধু জিপিটি-৩ মডেলের প্রশিক্ষণের সময়ই ৭ লাখ লিটারের বেশি সুপেয় পানি খরচ হয়েছে, যা দিয়ে কয়েকশ গাড়ি তৈরি করা সম্ভব। মূলত ডেটা সেন্টারের সার্ভার ঠান্ডা রাখতে এই পানি ব্যবহৃত হয়। এমনকি একজন ব্যবহারকারী যখন চ্যাটজিপিটিতে ২০ থেকে ৫০টি প্রশ্ন করেন, তখনও পরোক্ষভাবে প্রায় ৫০০ মিলিলিটার বোতল পানির সমপরিমাণ পানি ব্যবহার হয়।
প্রতিবছর চ্যাটজিপিটির কারণে প্রায় ৮.৪ টন কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ হয়, যা একজন সাধারণ ব্যক্তির বার্ষিক নিঃসরণের দ্বিগুণেরও বেশি। আর বিদ্যুৎ উৎপাদনে যদি জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা বাড়ে, তাহলে এই নিঃসরণের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
পরিবেশবিদ ও গবেষকরা বলছেন, এআই প্রযুক্তির পরিবেশগত ব্যয় সম্পর্কে আরও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ওপেনএআইসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। মাইক্রোসফ্টের সঙ্গেও ওপেনএআই মিলে কার্বন নিঃসরণ ও শক্তি ব্যবহার কমানোর উদ্যোগ নিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এআই প্রযুক্তি যত এগোচ্ছে, ততই প্রয়োজন আরও টেকসই, দায়িত্বশীল ও স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা। ব্যক্তি, গবেষক ও প্রতিষ্ঠান মিলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিকে পরিবেশবান্ধব বা ‘সবুজ’ পথে এগিয়ে নিতে উদ্যোগী হতে হবে।