ভুয়া মামলা ও মামলা বাণিজ্য বন্ধে ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনা হচ্ছে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, এই সংশোধনের মাধ্যমে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ না থাকা আসামিদের বিচার শুরু হওয়ার আগেই আদালত থেকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব হবে।
রোববার (২৯ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, যখন কোনো মামলা তদন্তের পর্যায়ে থাকে, তখন অনেক সময় মিথ্যা অভিযোগের কারণে অনেকেই বছরের পর বছর মামলা বাণিজ্যের শিকার হন। নতুন বিধানে বলা হয়েছে, যদি পুলিশ কমিশনার বা পুলিশ সুপার প্রাথমিক তদন্তে মনে করেন অভিযোগ যৌক্তিক নয়, তাহলে সেই রিপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমা দিতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট যদি প্রমাণের অভাবে দেখেন অধিকাংশ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই, তবে ট্রায়ালের আগে তাদের মুক্তি দিতে পারবেন।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, এই সংশোধনী কার্যকর হলে আদালত ও পুলিশ প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করে ভুয়া মামলা ও মামলা বাণিজ্য রোধে সক্ষম হবে। তবে তদন্ত থামবে না, তদন্ত শেষ হলে যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের নাম তদন্ত রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
তিনি জানান, একটি হত্যা মামলার তদন্তে দুই থেকে চার বছর সময় লাগে। কিছু ক্ষেত্রে এক ধরনের মামলা বাণিজ্যও হয়। সেখানে আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে আশঙ্কায় থাকেন কখন তাদের গ্রেফতার করা হবে বা মামলা বাণিজ্যের শিকার হবেন কি না। সেই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে এই নতুন বিধান করা হয়েছে।
নতুন বিধানে বলা হয়েছে, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার বা সমমানের পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তার অধীনে যেসব মামলা আছে, যদি তিনি মনে করেন তদন্ত যৌক্তিক, তাহলে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিতে পারেন প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে। তদন্ত কর্মকর্তা যখন সেই রিপোর্ট জমা দিবেন, পুলিশ কমিশনার বা পুলিশ সুপার তাকে বলতে পারবেন এটি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠাতে। ম্যাজিস্ট্রেট যদি দেখেন মামলায় ১০০ জনের মধ্যে ৯০ জনের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই, তাহলে ট্রায়ালের আগে তাদের মুক্তি দিতে পারবেন।