পশ্চিম গাজার সমুদ্রতীরবর্তী একটি জনপ্রিয় ক্যাফেতে ইসরায়েলের বিমান হামলায় কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
সোমবার (৩০ জুন) রাতে আল-বাকা ক্যাফেটেরিয়ায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এই স্থানটি অ্যাক্টিভিস্ট, সাংবাদিক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছিল।
গাজার হামাস শাসিত সিভিল ডিফেন্সের এক মুখপাত্র বিবিসিকে জানিয়েছেন, উদ্ধারকারী দলগুলো আল-বাকা ক্যাফেটেরিয়া থেকে ২০ জনের মরদেহ এবং কয়েক ডজন আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে। সৈকতের ধারে তাঁবুর মতো খোলা স্থানে অবস্থিত এই ক্যাফেতে বিস্ফোরণের ফলে একটি গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা এখনও আশেপাশে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় একটি প্রোডাকশন কোম্পানির ক্যামেরাম্যান আজিজ আল-আফিফি বিবিসিকে জানান, তিনি ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ক্যাফেটির দিকে যাচ্ছিলেন। মাত্র কয়েক মিটার দূরত্বে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান, যেখানে তার সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। দৃশ্যটি ছিল ভয়াবহ—চারদিকে মরদেহ, রক্ত আর চিৎকারের গর্জন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, একটি ক্ষেপণাস্ত্র গাজার ওই এলাকায় আঘাত হানেছে, যা ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। হামলার পরবর্তী মুহূর্তের দৃশ্যে মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মরদেহ দেখা যায়।
আল-বাকা ক্যাফেটেরিয়া গাজার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যেখানে সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্ট এবং দূর থেকে কাজ করা ব্যক্তিরা বসে কাজ করার সুযোগ পেতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই হামলার আগেও গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েল রাতভর বিমান হামলা চালায়, যার ফলে শত শত ফিলিস্তিনি পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। স্থানীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্ধারকারী দলগুলো ইতিমধ্যে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে এবং কয়েক ডজন আহত বেসামরিক নাগরিককে গাজা শহরের আল-আহলি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মার্চ মাসে আবারো যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এটি সবচেয়ে বড় ধরনের এলাকা ত্যাগের নির্দেশের ঠিক পরবর্তী সময়ে চালানো হয়েছে। এই ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন যুদ্ধবিরতি চুক্তি করার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়ছে।