গাজা শহরের বন্দর এলাকার একটি ক্যাফেতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৪১ জন নিহত এবং আরও ৭৫ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (৩০ জুন) রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফার পরিচালক ডা. মোহাম্মাদ আবু সিলমিয়া।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা গেছে, হামলার সময় ক্যাফেটিতে অনেক লোকজন ছিলেন, যাদের মধ্যে নারী, শিশু এবং সাধারণ বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে গত কয়েকদিন ধরেই গাজা অঞ্চলে ইসরায়েলের বিমান হামলা চলছে, যেখানে হামাসের সদস্য ও অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চলমান সংঘাতে ইতোমধ্যে শতাধিক বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সংঘাত বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান সত্ত্বেও পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।
জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা গাজার সাধারণ মানুষের ওপর হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জরুরি ভিত্তিতে মানবিক সহায়তার প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি তুলেছে।
সিএনএনের প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হামলার পর পুরো এলাকা ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এবং ক্যাফে ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটে। নিহতদের লাশ স্ট্রেচারে করে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য, আল-বাক্বা নামের ওই ক্যাফে ছিল গাজার শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও রিমোট কর্মীদের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় স্থান। এখান থেকে ভূমধ্যসাগরের মনোরম দৃশ্য উপভোগের পাশাপাশি ইন্টারনেট সংযোগসহ কাজ করার উপযোগী পরিবেশ ছিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামলার ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং হামলার আগে বেসামরিক হতাহতের ঝুঁকি কমানোর জন্য আকাশপথে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল। তাদের দাবি, উত্তর গাজায় হামাসের সদস্যদের লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে।
আহতদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে হাসপাতালগুলোতে সংকট দেখা দিয়েছে। আইসিইউ বেড, অ্যানেসথেশিয়া এবং পর্যাপ্ত কক্ষের অভাবে আহতদের অনেককেই মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে বলে জানান ডা. সিলমিয়া।
এদিকে, নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ইসমাইল আবু হাতাব। হামাস-নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া অফিসের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে ২২৮ জন সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন।