ছোটপর্দার আলোচিত অভিনেত্রী সামিরা খান মাহি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সরব। সাধারণত ক্যারিয়ার বা সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বললেও এবার ব্যক্তিগত এক বড় শোকের খবর জানিয়েছেন তিনি। তার কাজিন আবু শাহেদ রাসেলকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মাহি।
সোমবার (৩০ জুন) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে তিনি লেখেন, “আমার ভাইটা চলে গেল, ওকে মেরে ফেলল! আর আমরা কিছুই করতে পারলাম না।” ওই পোস্টে রাসেলের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ছবিও প্রকাশ করেন তিনি।
এর কিছুক্ষণ পর, কবরস্থানে রাসেলের দাফনের পর একটি ছবি পোস্ট করেন মাহি। সেখানে তিনি লেখেন, “আমি গভীর শোকের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমার কাজিন ছোট ভাই, যে আমাদের বাসায় থাকত, সে একটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে। একটি নোহা গাড়ি তাকে দুই-তিন বার ধাক্কা দিয়ে পুকুরে ফেলে দেয়। প্রায় ১৫ মিনিট পর দুজন ব্যক্তি পানির নিচ থেকে তাকে তোলে। এরপর যা ঘটেছে, সেটা আরও ভয়ংকর।”
সামিরা জানান, রাসেলকে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলেও সেখানকার কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি নেয়নি। কারণ তারা জানতে চেয়েছিল, তিনি কে, কোথা থেকে এসেছেন, বিল দেবে কিনা, পরিবার কে। এরপর সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলেও সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা অগোছালো ছিল এবং যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত রাসেল মারা যান।
সামিরা খান মাহি ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, “একজন মানুষের জীবন আগে, না টাকা-পয়সার হিসাব? একটা মানুষ রাস্তায় পড়ে থাকে, কেউ দাঁড়ায় না, এই কেমন মানবতা? সমাজ, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, মনুষ্যত্ব—সবই প্রশ্নের মুখে। আজ আমার ভাই গেছে, কাল আপনারও যেতে পারে। মানবতা ফিরে আসুক, মানুষের জীবনই হোক অগ্রাধিকার।”
সংবাদমাধ্যমকে সামিরা আরও জানান, শনিবার রাতে ফেনী থেকে ঢাকায় ফেরার পথে কুমিল্লার ময়নামতি এলাকায় রাসেল দুর্ঘটনার শিকার হন। রাত ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে একটি বড় গাড়ি তার গাড়িকে ধাক্কা দেয়, যার ফলে তা পাশের পুকুরে পড়ে যায়। আশেপাশে কোনো বড় যানবাহন না থাকলেও একটি মোটরসাইকেল ছিল, তারাই উদ্ধার করে কাছাকাছি হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কিন্তু দ্রুত চিকিৎসার অভাবে এক ঘণ্টার মধ্যেই রাসেল মারা যান। ঠিক কোন গাড়ি ধাক্কা দিয়েছে, সে বিষয়ে কেউ নিশ্চিত না হওয়ায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মাহি। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মরদেহের পোস্টমর্টেম করা হয়নি। গত রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাসেলের দাফন সম্পন্ন হয়।