ইউরোপজুড়ে কয়েকদিন ধরেই তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে, যার ফলে মহাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে গরম ক্রমেই অসহনীয় রূপ ধারণ করেছে। জার্মানিতে তাপমাত্রা রেকর্ড পর্যায়ে উঠে প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে ইতালি, স্পেন ও গ্রিসের পরিস্থিতিও দিন দিন আরও সংকটময় হয়ে উঠছে। দক্ষিণ ইউরোপের কিছু এলাকায় রাতের তাপমাত্রাও ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামছে না।
গরমের তীব্রতায় বিভিন্ন দেশ সতর্কতা ঘোষণা করেছে। জার্মানির শহরগুলোতে জনসমাগম কমে গেছে, অনেক স্কুল বন্ধ বা আগেই ছুটি দেওয়া হচ্ছে এবং জলাশয়ের ধারে মানুষ ভিড় জমাচ্ছে। তাপপ্রবাহের কারণে নানা জায়গায় সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে।
জার্মান আবহাওয়া সংস্থার এক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, এই তীব্র গরমের পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ। বায়ুমণ্ডলের ওপরের অংশে গঠিত শক্তিশালী উচ্চচাপ, দীর্ঘ সময় ধরে সূর্যালোক ও সূর্যের উচ্চ অবস্থান মিলিত হয়ে ‘হিট কাপ’ বা ‘হিট ডোম’ তৈরি করেছে। এতে মেঘ গঠন কমে এবং গরম বাতাস নিচে নামায় তাপমাত্রা আরও বাড়ে। পাশাপাশি সাহারা মরুভূমির ধুলাবালু, ভেজা মাটি ও শীতল পানির উৎস কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
জার্মান আবহাওয়া সংস্থার পূর্বাভাস অনুযায়ী, সপ্তাহের মাঝামাঝি তাপমাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে, যা স্থানের ওপর নির্ভর করে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে। বুধবার হতে পারে এবারের গ্রীষ্মের সবচেয়ে গরম দিন, তবে বৃহস্পতিবার থেকে গরম কিছুটা কমতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইতালিতে ‘কারোন্তে’ নামে একটি উচ্চচাপ অঞ্চল প্রচণ্ড গরমের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোম, ফ্লোরেন্স, বোলোনিয়া ও পেরুজিয়ার তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৭টি শহরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। পুগলিয়া, বেসিলিকাতা ও সিসিলিতে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, এজন্য দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কৃষি ও নির্মাণকাজে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
আফ্রিকা থেকে আসা গরম বাতাস স্পেনে গ্রীষ্মের প্রথম তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে এনেছে, যেখানে তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছানোর পূর্বাভাস রয়েছে। গ্রিসের বিভিন্ন এলাকায় তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়ানোর সম্ভাবনা থাকায় দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সব প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান বন্ধ রাখা হয়েছে।