আদানি পাওয়ারের কাছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিল বাবদ সব বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ সরকার ভারতীয় এই প্রতিষ্ঠানটিকে একযোগে ৪৩৭ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে। এর মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত আদানির পাওনা সম্পূর্ণ পরিশোধ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
বুধবার (২ জুলাই) ভারতের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, বাংলাদেশের কাছ থেকে এটি আদানি পাওয়ারের সবচেয়ে বড় এককালীন অর্থপ্রাপ্তি। সাধারণত তারা প্রতি মাসে গড়ে ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার পেত।
সূত্র জানায়, বকেয়া বিল, বিলম্ব সুদসহ সব ধরনের অর্থ পরিশোধের ফলে বাংলাদেশ ও আদানি পাওয়ারের মধ্যকার আন্তঃদেশীয় বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তি এখন আর্থিক ও আইনি দিক থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। পাশাপাশি, এই চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যেসব প্রশ্ন তোলা হয়েছিল, সেগুলোরও সমাধান হয়েছে।
ভারতের ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আদানি পাওয়ার দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে। সব পাওনা পরিশোধের পর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) আদানিকে জানিয়েছে, কেন্দ্রের দুইটি ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার ইউনিটই এখন থেকে বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী চালু রাখতে হবে।
বিদ্যমান চুক্তি অনুযায়ী, ৩০ জুনের মধ্যে সব বকেয়া পরিশোধ করলে বিলম্ব ফি মওকুফ করা হবে বলে বলা হয়েছিল। বাংলাদেশ সময়মতো অর্থ পরিশোধ করায় সেই সুবিধাও পেয়েছে। পাশাপাশি, বিল পরিশোধে নিয়মিততা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকার ১৮০ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ একটি এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খুলেছে এবং বাকি পাওনার জন্য রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি দিয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের মে মাসে ইকোনমিক টাইমসের আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়, আদানির কাছে বাংলাদেশের মোট বকেয়া প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। তবে আদানির প্রধান নির্বাহী এস.বি. খ্যালিয়া তখন বলেছিলেন, বকেয়া থাকলেও কখনোই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর আদানি পাওয়ারের সঙ্গে ২৫ বছরের জন্য বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগ। ওই চুক্তির আওতায় ভারতের ঝাড়খণ্ডের গোড্ডায় ২০০ কোটি ডলার ব্যয়ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে আদানি গ্রুপ।
এখন গোড্ডা বিদ্যুৎ প্রকল্পটি, যা আগে আদানির একটি সহায়ক প্রতিষ্ঠানের অধীনে ছিল, সেটিকে মূল কোম্পানির সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে। এতে অপারেশন ও আর্থিক ব্যবস্থাপনায় আরও গতি আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।