আদালত অবমাননার মামলায় দেশব্যাপী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশত্যাগকারী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একই মামলায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ২৫ অক্টোবর গাইবান্ধার এক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে টেলিফোনে আলাপের সময় ২২৭ জনকে হত্যার হুমকি দেন ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা। ওই কথোপকথনে যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, যারা বাদী, সাক্ষী কিংবা তদন্তে জড়িত, তাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়, যা আদালতের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টির শামিল।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় ট্রাইব্যুনালের স্বাধীনতা ও বিচারিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা হয়েছে।
আদালত অবমাননার এ মামলায় গত শুনানিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন বিশেষজ্ঞ এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়ক) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে, ২ জুলাই মামলার রায় ঘোষণার দিন ঠিক করা হয়।
অডিও প্রকাশের পর সিআইডির ফরেনসিক পরীক্ষায় এর সত্যতা পাওয়া যায়। ‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’— এমন বক্তব্যের অডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মামলার নোটিশ গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হলেও শেখ হাসিনা নিজে উপস্থিত হননি এবং কোনো আইনজীবীর মাধ্যমে ব্যাখ্যা দেননি। তবে আদালত ন্যায়বিচারের স্বার্থে তাঁর পক্ষে একজন আইনজীবী নিয়োগের নির্দেশ দেয়।
সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ট্রাইব্যুনাল বুধবার এ মামলার রায় ঘোষণা করে।