নেদারল্যান্ডসভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিসিও-বিডি’র কর্মকর্তা ও ইতালীয় নাগরিক তাবেলা সিজারের হত্যা মামলায় তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেছে আদালত। অপর চার আসামিকে মামলায় খালাস দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন তামজিদ আহমেদ ওরফে রুবেল, রাসেল চৌধুরী ও মিনহাজুল আরেফিন ওরফে ভাগ্নে রাসেল। তাদের সঙ্গে তিনজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও জরিমানার পর অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়।
খালাসপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন বিএনপির নেতা এম এ কাইয়ুম, তার ভাই আবদুল মতিন, শাখাওয়াত হোসেন এবং সোহেল।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা এই রায়ে সন্তুষ্ট না হলেও, রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি পাওয়ার পর তারা আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা আরও উল্লেখ করেন যে, তৎকালীন সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপি নেতাদের মামলায় আসামি করেছিল।
মামলার এজাহারে উল্লেখ আছে, ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশান এভিনিউয়ের কাছে গভর্নর হাউজ সংলগ্ন ফুটপাতে দুর্বৃত্তরা তাবেলা সিজারকে গুলি করে। পরে স্থানীয়রা তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) দায় স্বীকারের বিবৃতি দেয় বলে একটি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়। এরপর গুলশান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
২০১৬ সালের ২৮ জুন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এম এ কাইয়ুমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। একই বছরের ২৪ আগস্ট তৎকালীন মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
চার্জশিটে কাইয়ুমের ভাই আবদুল মতিন, তামজিদ আহমেদ (রুবেল), রাসেল চৌধুরী, মিনহাজুল আরেফিন (ভাগ্নে রাসেল), শাখাওয়াত হোসেন এবং সোহেলকে আসামি করা হয়। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
মামলার চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে, হামলাকারীদের মূল উদ্দেশ্য ছিল একজন শ্বেতাঙ্গকে হত্যা করে দেশ-বিদেশে আতঙ্ক সৃষ্টি করা এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা।