দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ ইয়েমেনে আক্রমণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এ ঘোষণা দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (৩ জুন) তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুতিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েল কাটজ। সম্প্রতি হুতির ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলি বাহিনী প্রতিহত করার পর তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে কাটজ বলেছেন, ‘ইয়েমেনের সঙ্গে তেহরানের মতোই কঠোর আচরণ করা হবে। তেহরানে আমরা যেভাবে আঘাত হেনেছি, একইভাবে হুতিদেরও আঘাত করব। যেই আমাদের বিরুদ্ধে হাত তুলবে, তার হাত কেটে ফেলা হবে।’
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ইয়েমেন থেকে ছোড়া মিসাইলটি তাদের বিমানবাহিনী প্রতিহত করেছে। এই ঘটনায় হুতিদের পক্ষ থেকে এখনও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে সরাসরি এবং উসকানিমূলক হামলা চালায়, যার ফলে ইরানের উচ্চপর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তা, পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সাধারণ নাগরিক নিহত হন।
প্রায় এক সপ্তাহ পর যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়ে যুদ্ধের মধ্যে প্রবেশ করে। ইরান এসব হামলাকে জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন ও পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
এই হামলার জবাবে ইরানি সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েল অধিকৃত বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনায় এবং কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল-উদেইদ সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা হামলা চালায়।
এরপর ২৪ জুন, তখনকার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া পোস্টে তিনি জানান, ‘ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে চূড়ান্ত সম্মতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে যুদ্ধবিরতি ১২ ঘণ্টা চলবে, এরপরই যুদ্ধ সমাপ্ত ঘোষণা করা হবে।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘প্রথমে ইরান যুদ্ধবিরতি শুরু করবে, ১২ ঘণ্টা পর ইসরায়েলও আনুষ্ঠানিকভাবে এতে যোগ দেবে। মোট ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ বিশ্বব্যাপী সমাপ্ত হিসেবে স্বীকৃত হবে।’
তিনি লিখেছেন, যুদ্ধবিরতির সময় দুই পক্ষই শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক আচরণ বজায় রাখবে। আমরা আশা করি সবকিছু পরিকল্পনা মতোই হবে, যা অবশ্যই হবে। এজন্য আমি ইসরায়েল ও ইরানের প্রতি সাহস, ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার জন্য অভিনন্দন জানাই।
ট্রাম্প উল্লেখ করেন, ‘এই যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হলে মধ্যপ্রাচ্য ধ্বংসের মুখে পড়তো। তবে তা হয়নি এবং কখনো হবে না।’