ঢাকা | বঙ্গাব্দ

মোসাদের ‘হানি ট্র্যাপে’ পড়ার আগে ইসরায়েলকে নাকানিচুবানি দেন তিনি

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jul 5, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:

১৯৮৬ সালের ঘটনা। মধ্যপ্রাচ্যের দখলদার ইসরায়েলের পরমাণু প্রকৌশলী মোর্দেচাই ভানুনু ঘুরতে যান ব্রিটেনে। তবে সাধারণ ভ্রমণের বদলে তিনি সোজা যান লন্ডনের খ্যাতনামা সংবাদপত্র সানডে টাইমস-এর দপ্তরে। সেখানেই তিনি ফাঁস করে দেন ইসরায়েলের বহুদিনের গোপন পরমাণু কর্মসূচির তথ্য, যা বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোড়ন তোলে।

ভানুনুর দেওয়া তথ্যে উঠে আসে, দীর্ঘদিন ধরেই গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে আসছে ইসরায়েল। যদিও এখন পর্যন্ত দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে পরমাণু অস্ত্রের অস্তিত্ব স্বীকার করেনি।

তবে তথ্য ফাঁসের চেয়েও বড় চমক ছিল ভানুনুর ভাগ্য। মোসাদ কি তাকে ছাড় দেবে? কখনোই নয়। সানডে টাইমস তাকে নিরাপত্তার জন্য সেফ হাউজে রাখলেও মোসাদের কৌশলের কাছে তা টেকেনি।

সেফ হাউজে থেকেও মাঝে মাঝে বাইরে যেতেন ভানুনু। এভাবেই একদিন লন্ডনে পরিচয় হয় ‘সিনডি’ নামের এক নারীর সঙ্গে। বন্ধুত্বের সূত্র ধরে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। পরে প্রেমিকা সিনডির আহ্বানে ইতালি ভ্রমণে রাজি হন তিনি। সানডে টাইমস আপত্তি জানালেও শেষ পর্যন্ত আটকাতে পারেনি।

কিন্তু রোমে পৌঁছানোর পর শুরু হয় গোয়েন্দা গল্পের মতো নাটকীয়তা। ভানুনুকে আটক করে মোসাদ। নেশাদ্রব্য প্রয়োগ করে তাকে একটি জাহাজে তুলে গোপনে ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জানা যায়, ‘সিনডি’ আসলে ছিলেন মোসাদের এজেন্ট চেরিল বেন টভ, যিনি অভিনবভাবে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভানুনুকে ‘হানি ট্র্যাপে’ ফেলেছিলেন।

পরে রাষ্ট্রদ্রোহ ও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ভানুনুকে ১৮ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০০৪ সালে মুক্তি পেলেও এখনও তার ওপর বিদেশ ভ্রমণ ও বিদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগের কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

মুক্তির পর ভানুনু বলেছিলেন, ‘‘আমি অনুতপ্ত নই। সত্য প্রকাশ করাটাই ছিল আমার দায়িত্ব।’’


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স