মালয়েশিয়ায় আটক বাংলাদেশিদের নতুন তথ্য সামনে আনলেন জুলকারনাইন

মালয়েশিয়ায় চরমপন্থি উগ্র মতবাদ ও সন্ত্রাসবাদী আদর্শের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৫ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ। এ নিয়ে আজ শনিবার (৫ জুলাই) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট দিয়েছেন।

পোস্টে গ্রেপ্তারকৃতদের একটি বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ করেছেন তিনি। তালিকা অনুযায়ী, গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন পারভেজ মাহমুদ পাবেল, শরীফ উদ্দিন, রোহমান মোহাম্মদ হাবিবুর, সালেহ আহমেদ, মো. রাজ, জাহেদ আহমেদ, মোহাম্মদ মনসুরুল হক, মুহাম্মদ আবদুস সহিদ, মাহফুজ, ইমন মহিদুজ্জামান, আকরাম মো. ওয়াসিম, মিয়া মো. মতিন, নজরুল ইসলাম সোহাগ, রবিউল হাসান, শেখ সালাম, মোহাম্মদ রাজ মাহমুদ মন্ডল, আশরাফুল ইসলাম, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দিন, মোহাম্মদ সোহেল রানা, মোহাম্মদ আফসার ভূঁইয়া, ফয়সাল আলম, হোসেন শাহেদ, মো. আসিকুর বিশ্বাস, মো. সোয়ুন, মো. ইয়াসিন আলী, মোহাম্মদ পারভেজ মোশাররফ, মহিউদ্দিন, সাব্বির হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. শাকিল মিয়া, আসাদুজ্জামান হোসেন, মো. সোহাগ রানা ও রায়হান আহমেদ।

বিস্তারিত অনুসন্ধানে জানা গেছে, আটককৃতদের মধ্যে ৩৫ জন বাংলাদেশি ও একজন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক ছিলেন। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেররিজম ডিভিশন তাদের অভিবাসনসংক্রান্ত কাগজপত্র যাচাই করে নিশ্চিত করেছে যে, ৩৫ জনের মধ্যে ১৪ জন মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে অবস্থান করছিলেন। বৈধ কাগজপত্র না থাকার কারণে তাদের ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ পর্যন্ত জাহেদ আহমেদ, ইমন মহিদুজ্জামান, আকরাম মো. ওয়াসিম, নজরুল ইসলাম, শেখ সালাম ও মো. রেদওয়ানুল ইসলামকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। নিরাপত্তা সংস্থা তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে আটক করেছে। তালিকাভুক্ত বাকি ৮ জনকে আগামী ৭ আগস্ট ফেরত পাঠানোর কথা রয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে প্রথম ৫ জনকে মালয়েশিয়ায় প্রিভেনশন অব টেররিজম অ্যাক্টের আওতায় আটক করে চার্জ গঠন করা হয়েছে এবং তালিকার ২০ থেকে ৩৫ নম্বরের মধ্যে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকদের একই আইনের আওতায় আটক দেখিয়ে তদন্ত চলছে।

মালয়েশিয়ার পুলিশপ্রধান শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীর মতাদর্শ ছড়িয়ে তহবিল সংগ্রহের একটি চক্র ভেঙে দেয়া হয়েছে। এই চক্র আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সার্ভিস ও ই-ওয়ালেট ব্যবহার করে সিরিয়া ও বাংলাদেশে আইএসের জন্য অর্থ পাঠাতো।

মালয়েশিয়া পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাউন্টার টেররিজম ডিভিশন তাদের অর্থ সংগ্রহের প্রমাণ পেয়েছে। যদিও কত অর্থ সংগ্রহ হয়েছে তা এখনো তদন্তাধীন। ধারণা করা হচ্ছে, সদস্য ফি ও চাঁদা থেকেই এই অর্থ এসেছে।

মালয়েশিয়া স্টার পত্রিকার বরাতে জানা গেছে, ‘গেরাকান মিলিটান রেডিক্যাল বাংলাদেশ’ বা ‘জিএমআরবি’ নামে পরিচিত এই চক্র হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের মতো অ্যাপে সদস্য সংগ্রহ ও উগ্র মতবাদের প্রচার করছিল।