ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বিচার বিভাগ স্বাধীন না হলে টেকসই গণতন্ত্র সম্ভব নয়: প্রধান বিচারপতি

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jul 18, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন না হলে টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে না। বিচার বিভাগের অর্থবহ ও টেকসই স্বাধীনতা নিশ্চিত করা না হলে আইনের শাসন ও পদ্ধতিগত গণতন্ত্রের ঐতিহাসিক সুযোগ নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, শুধু বিচার বিভাগ নয়, সব ধরনের কাঠামোগত সংস্কার টেকসই রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির ওপর নির্ভরশীল।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে প্রয়াত আইনজীবী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদের স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, “বিচার বিভাগের স্বাধীন অস্তিত্ব নিশ্চিত না করলে ভবিষ্যতের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারও টেকসই হবে না। মাসদার হোসেন মামলার মাধ্যমে বিচার বিভাগের পৃথককরণে ব্যারিস্টার ইশতিয়াক আহমেদের রূপরেখা আজও প্রাসঙ্গিক।”

সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামালের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে তিনি বলেন, “সংবিধানের ১০৯ ও ১১৬ অনুচ্ছেদের মধ্যে দ্বৈততা রয়েছে। হাইকোর্ট অধস্তন আদালতের তত্ত্বাবধানে থাকলেও নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে রয়েছে, যা সাংবিধানিক অসঙ্গতি। ১১৬ অনুচ্ছেদ সঠিকভাবে প্রয়োগ না হলে তা ‘তামাশায়’ পরিণত হতে পারে।”

সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদকে স্মরণ করে তিনি বলেন, “তিনি শুধু বিচার বিভাগের সচিবালয়ের পথপ্রদর্শক ছিলেন না, বরং গণতান্ত্রিক কাঠামোর নির্ভরযোগ্য রূপকারও ছিলেন। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি আজও আমাদের পথ দেখায়।”

বর্তমান রোডম্যাপ বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমি যে রোডম্যাপ দিয়েছি, তা কেবল একটি ঘোষণাপত্র নয়; এটি একটি রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত ও জনগণের সেবায় উপযোগী কার্যকর উদ্যোগ।”

তবে এই রোডম্যাপ বাস্তবায়নের পথে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রতিবন্ধকতার কথাও উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিচার বিভাগের সঙ্গে রাজনৈতিক স্বার্থের গোপন সংযোগ দশক ধরে গড়ে উঠেছে, যা ভাঙা সহজ নয়। এর সঙ্গে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাও বড় বাধা।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদিন, সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি এ. এম. মাহবুব উদ্দিন খোকন, প্রবীণ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী, নিহাদ কবির ও মোস্তাফিজুর রহমান খান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট অরিফ খান এবং সঞ্চালনায় ছিলেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স