এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন কিংবা গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একটি সমাধান প্রস্তাব করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হলে এবং বিভেদ-অনৈক্য অব্যাহত থাকলে দেশ আবারও ‘ওয়ান ইলেভেন’ পরিস্থিতির দিকে অগ্রসর হবে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে বিজয়নগরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-এর প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
মঞ্জু বলেন, “এটা আর পদধ্বনি নয়, আমরা সবাই মিলে যেন ২০০৭ সালের ডিসেম্বর-জানুয়ারির মতো দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি, তা স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি।”
তিনি শহীদদের স্মরণ করে বলেন, “আজকের এই দিনে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সেইসব মহান শহীদদের, যারা জীবন দিয়ে গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছেন। আহত ও পঙ্গুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এবং আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সর্বস্তরের নাগরিকদের প্রতি রইলো আমাদের আন্তরিক শ্রদ্ধা।”
তিনি অভিযোগ করেন, আজ এক বছর পরও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিভেদ প্রকট। এ প্রসঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, এবি পার্টি প্রথম থেকেই আন্দোলনের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন জানিয়েছে, যদিও দল হিসেবে তারা নেতৃত্বে ছিল না বা পর্দার আড়ালেও কোনো গোপন ভূমিকা পালন করেনি।
“আমরা আমাদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ দিয়ে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি। কিন্তু এখন অবদান নিয়ে বিতর্ক চলছে। এই বিতর্কের নিরসন না হলে জুলাই আরেকটি দীর্ঘমেয়াদি বিভক্তির জন্ম দেবে,” বলেন তিনি।
মঞ্জু অনুরোধ জানান, “জুলাই ঘোষণাপত্র যেন কেবল অলংকারে ভরা কাগজ না হয়। এর প্রতিটি অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য আমাদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে।”
তিনি বলেন, “এক উপদেষ্টা পদধ্বনি শুনছেন, কিন্তু আমরা স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি, ওয়ান ইলেভেন আমাদের সামনে হাজির হয়ে গেছে। অনেকেই ভাবছেন শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন, কিন্তু বাস্তবতা হলো, তার প্রেতাত্মারা এখনো পুরো দেশে সক্রিয়ভাবে অবস্থান করছে। রাজনৈতিক বিভক্তি দূর করতে না পারলে এবং গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে না পারলে, আজ যারা নিজেকে প্রধান শক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন, তারাও জনগণের জবাবদিহি থেকে রেহাই পাবেন না।”
সব রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ্য করে মঞ্জু বলেন, “বিভাজনের মধ্য দিয়ে কখনও গণ-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা যায় না। দলীয় ও ব্যক্তিগত স্বার্থ ত্যাগ করে একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্র গঠনে আমাদের সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।”
এ সময় ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, “আজ আমরা আবার ফ্যাসিবাদ ও দিল্লির বয়ান শুনতে পাচ্ছি। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে।”
তিনি বলেন, “সরকার আজ জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবে। আমরা সেখানে উপস্থিত থাকব, তবে দুঃখজনকভাবে দেখছি অনেক অংশগ্রহণকারী সংগঠন এই অনুষ্ঠান বর্জন করছে। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ও হতাশাজনক। সরকারের উচিত ছিলো সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।”
Abdur Rabby
