ঢাকা | বঙ্গাব্দ

ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট বরখাস্ত, কারণ কী?

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Apr 6, 2025 ইং
সম্প্রতি শাহরাম দাবিরি ও তার স্ত্রীর একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে ছবির ক্যাপশন: সম্প্রতি শাহরাম দাবিরি ও তার স্ত্রীর একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান শনিবার (৫ এপ্রিল) এক আদেশে ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহরাম দাবিরিকে বরখাস্ত করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘দাবিরির সফরের একটি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করার পরই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।’

শাহরাম দাবিরি পেশায় একজন চিকিৎসক এবং ফুটবল প্রশাসক। তিনি তাবরিজ সিটি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। গত বছরের আগস্টে তাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

সম্প্রতি শাহরাম দাবিরি ও তার স্ত্রীর একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায় তারা অ্যান্টার্কটিকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া এমভি প্ল্যানসিয়াসের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন।

এমভি প্ল্যানসিয়াসে অ্যান্টার্কটিকা অভিযানের খরচ কমপক্ষে ৬ হাজার ৬৮৫ ডলার, যা ইরানি মুদ্রায় ২৮ কোটি ১৪ লাখেরও বেশি। সাধারণত বিশ্বের সবচেয়ে শীতল ও কম জনবহুল এই মহাদেশে বিজ্ঞানী এবং অভিজ্ঞ অভিযাত্রীরা ভ্রমণ করে থাকেন।

ভাইস প্রেসিডেন্টের ওই ছবি ইরানিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে, এবং এর পরেই তাকে বরখাস্ত করা হয়।

ইরানের অর্থনীতি বর্তমানে বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে, কারণ হামাস এবং হিজবুল্লাহসহ বিভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন করার জন্য দেশটি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর তথ্যানুসারে, ২০২৪ সালের অক্টোবরের মধ্যে ইরানের বেকারত্বের হার ৮.৪ শতাংশ এবং বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির হার ২৯.৫ শতাংশ ছিল।

ইরানের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘জনসাধারণের অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যয়বহুল বিদেশ সফর গ্রহণযোগ্য নয়, তা যদি ব্যক্তিগত খরচেও হয়। এটি ইরানি কর্মকর্তাদের প্রত্যাশিত সাদাসিধা জীবনযাপনের পরিপন্থি।’

শাহরাম দাবিরির উদ্দেশ্যে মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, ‘আমাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব রয়েছে, তবে সংসদীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে আপনি যা করেছেন তা জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ।’

এ বিষয়ে ইরান সরকারের মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের এমন পদক্ষেপ প্রমাণ করে, তিনি ভ্রাতৃত্ব সম্পর্কের চেয়ে ন্যায়বিচার, সততা এবং জনসাধারণকে গুরুত্ব দেন।’

ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশটির প্রশাসনে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহির বার্তা দিচ্ছে। একই সঙ্গে এটি একটি সতর্ক সংকেত যে, সরকারি পদে থেকে কোনো ধরনের বিলাসিতা কিংবা দায়িত্বহীন আচরণ আর সহজে মেনে নেওয়া হবে না।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স