বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের দুবলারচরের আলোরকোলে আজ, সোমবার (৩ নভেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে শতবর্ষী তিন দিনের রাসমেলা। আধ্যাত্মিক পরিবেশ, ধর্মীয় আচার এবং প্রকৃতির অপূর্ব দৃশ্যে মুখরিত হবে এই কিংবদন্তি দ্বীপ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্ত তীর্থযাত্রীরা বাদ্যযন্ত্র, পূজার সামগ্রী ও নৌযান নিয়ে ইতিমধ্যেই মেলার পথে যাত্রা শুরু করেছেন।
বন বিভাগ এই বছর শুধুমাত্র সনাতন ধর্মাবলম্বী তীর্থযাত্রীদের প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে। নিরাপত্তা এবং সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে সাধারণ পর্যটকদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তীর্থযাত্রীদের নিরাপদ যাত্রার জন্য বন বিভাগ পাঁচটি নির্দিষ্ট নৌপথ নির্ধারণ করেছে। এগুলো হলো: মোংলা-হারবারিয়া, শ্যামনগর-কোবাদাক চ্যানেল, বুড়িগোয়ালিনী-অভ্যন্তরীণ নদীপথ, খুলনা-দাকোপ-বলেশ্বর এবং পাথরঘাটা-শরণখোলা রুট। প্রতিটি রুটে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং নিবন্ধনবিহীন বা অননুমোদিত কোনো নৌযান প্রবেশ করতে পারবে না। এছাড়া প্রতিটি নৌযানে লাইফজ্যাকেট, সেফটি সিগন্যাল ও যাত্রীর তালিকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
মেলাকে কেন্দ্র করে বন বিভাগ, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকদের সমন্বয়ে বহুস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় গঠন করা হয়েছে। জল ও জঙ্গল উভয় এলাকায় টহলদল মোতায়েন রয়েছে এবং কন্ট্রোলরুম থেকে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে।
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) এ জেড এম হাসানুর রহমান জানান, “সোমবার সকাল ৮টা থেকে নৌযানগুলো যাত্রা শুরু করবে। নির্ধারিত রুটে লাল পতাকা বসানো হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং বনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কঠোর নজরদারি থাকবে।”
পূর্ণিমার রাতে সমুদ্রস্নান, প্রদীপ প্রজ্বালন, আরতি, কীর্তন এবং প্রসাদ বিতরণ এই মেলার প্রধান আকর্ষণ। প্রায় এক শতাব্দী আগে সাধু হরিভজনের আধ্যাত্মিক তপস্যা থেকেই দুবলারচরে এই রাসমেলার সূত্রপাত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।
Abdur Rabby
