ঢাকা | বঙ্গাব্দ

মৃৎশিল্প প্রদর্শনী ও পিঠা উৎসবে মেতে উঠেছে ঠাকুরগাঁও

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Nov 3, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:

ঠাকুরগাঁওয়ে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্পকে বাঁচাতে মৃৎশিল্পীদের হাতে তৈরি পণ্যের একটি প্রদর্শনী মেলা আয়োজন করা হয়েছে। একই সঙ্গে জেলায় শীতের আগমনকে কেন্দ্র করে পিঠা উৎসবের আয়োজনও করা হয়েছে, যা উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মেলায় দেখা গেছে, একদল মৃৎশিল্পী চেয়ারে বসে তাদের হাতে তৈরি নানা ধরনের পণ্য প্রদর্শন করছেন। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে খেলনা, কাপ-প্রিজ, ফুলদানি, মগ, প্লেট, চামচ, ডিনারসেটসহ বিভিন্ন পণ্য। এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য হারিয়ে যাওয়ার পথে থাকা মৃৎশিল্পকে পুনরায় জীবন্ত করা।

এছাড়া জেলার নারী উদ্যোক্তারা পিঠা উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন। তারা তাদের তৈরি মালাই পিঠা, কলা পিঠা, ক্ষীর পিঠা, দুধপুলি, নারিকেল পিঠা, পানিসাপটা পিঠাসহ নানা ধরনের পিঠা প্রদর্শন ও বিক্রি করছেন। উৎসবে বিভিন্ন বয়সী মানুষ এবং স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে মেলা উপভোগ করছেন।

মৃৎশিল্পীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য চলতি বছরের ৪ অক্টোবর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২০ জন মৃৎশিল্পীর সঙ্গে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আজ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও জেলা পরিষদের সহযোগিতায় সেই প্রশিক্ষণে তৈরি পণ্যগুলো ডিসি পর্যটন পার্কে প্রদর্শন করা হয়েছে।

সদর উপজেলার আকচা পালপাড়ার মৃৎশিল্পী সুবোধ পাল বলেন, “আমরা প্রজন্ম ধরে মাটি দিয়ে কাজ করছি। একসময় বাড়ি বাড়ি মাটির হাঁড়ি-পাতিল ছাড়া রান্না হতো না। এখন সেই দিন নেই। তবু এই মেলায় এসে মনে হচ্ছে মানুষ এখনো মাটির জিনিস ভালোবাসে। বিক্রিও ভালো হচ্ছে। প্রশাসন নিয়মিত এমন আয়োজন করলে পেশায় টিকে থাকা সম্ভব।”

অন্য মৃৎশিল্পী মালতি রানী পাল বলেন, “কাঁচামালের দাম বাড়লেও পণ্যের দাম বাড়ে না। তবু আজ বিক্রি হয়েছে, মানুষ প্রশংসা করছে। নতুন করে কাজের উৎসাহ পেয়েছি।” নারী উদ্যোক্তা উম্মে কুলসুম বলেন, “আমি পাটিসাপটা, চিতই ও ভাপা পিঠা বানিয়েছি। আগে শুধু বাড়ির জন্য করতাম, এখন বিক্রি করে আয়ও হচ্ছে। মানুষ আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছে, দামও জিজ্ঞেস করছে। এটি আমাদের জন্য বড় স্বীকৃতি।”

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা বলেন, “কুমার জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের জন্য আমরা ২০ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ভবিষ্যতে তারা যে পণ্য তৈরি করবে, আমরা সেগুলো বাজারজাতকরণে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। এতে তারা মানুষের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য তৈরি করতে পারবে এবং তার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে, যা তাদের সার্বিক জীবনমান উন্নয়নে কাজে লাগবে।”


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স