ঢাকা | বঙ্গাব্দ

জুলাইয়ের মধ্যে ভোটের কর্মপরিকল্পনা ঘোষণার চিন্তা ইসির, লক্ষ্য ডিসেম্বরে ভোট

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Apr 8, 2025 ইং
নির্বাচন ছবির ক্যাপশন: নির্বাচন

নির্বাচন কমিশন (ইসি) আগামী ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরই মধ্যে প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী জুন-জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন কার্যক্রমের বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করার চিন্তা করছে সংস্থাটি।

সাংবিধানিকভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন ইসির দায়িত্ব হলেও, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকার ওপর নির্ভর করছে নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, ডিসেম্বর ২০২৫ থেকে জুন ২০২৬ সালের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি জোরদার করা হচ্ছে। একটি খসড়া কর্মপরিকল্পনা ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে। যদিও এখনো সুনির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ হয়নি, তবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও নিয়োগসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তুতিমূলক কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, ডিসেম্বরকে লক্ষ্য রেখে প্রস্তুতি চলছে এবং অক্টোবরের মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে।

ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে এ বছর বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং ৬০ লাখের বেশি নাগরিকের তথ্য নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মৃত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার কাজও চলছে। ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম জুন নাগাদ শেষ হবে বলে আশা করছে ইসি। তবে আইন অনুযায়ী, এসব হালনাগাদ তথ্য ২০২৬ সালের ২ মার্চ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে, ফলে এর আগে নির্বাচন হলে আইন সংশোধনের প্রয়োজন পড়তে পারে।

সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ ইসির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। নতুন আদমশুমারি ও কিছু আসনের জটিলতা মাথায় রেখে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে চায় ইসি। তবে বর্তমান আইনে একটি ছাপার ভুল রয়েছে, যার কারণে বড় পরিবর্তন আনা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে সংশোধনী প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও এখনো অনুমোদন মেলেনি।

নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত কমিশনের প্রস্তাবিত বেশ কিছু আইন ও বিধিমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আরপিও, আচরণবিধি, পর্যবেক্ষক নীতিমালা ইত্যাদি। সংস্কার কমিশনের নয়টি প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ইসিতে পাঠানো হয়েছে। এসব বাস্তবায়নে সময় ও ব্যয় সংক্রান্ত বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে।

নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নির্বাচনী সামগ্রী কেনাকাটা ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নিয়োগ প্রক্রিয়াও চলছে। এ ছাড়া ভোটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি ও অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে পুলিশ তাদের সম্পূর্ণ জনবল সক্রিয় রাখতে পারবে বলে ইসি আশা করছে।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, সাংবিধানিক ক্ষমতার ভিত্তিতে একটি স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনই ইসির লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সবধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার জানিয়েছেন, অধিকাংশ সংস্কার অধ্যাদেশের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন সম্ভব, সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হবে না। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, দ্রুত সংস্কার শেষ করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স