ঢাকা | বঙ্গাব্দ

মার্কিন শুল্কারোপের অভিঘাত স্পষ্ট হচ্ছে, দাম কমানো-শিপমেন্ট পেছানোর প্রস্তাব আসছে

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Apr 9, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:

যুক্তরাষ্ট্রের বর্ধিত শুল্কের প্রভাবে বাজারে চাপ তৈরি হচ্ছে, এবং ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো দাম কমানোর প্রস্তাব দিচ্ছে। কিছু প্রতিষ্ঠান শিপমেন্ট বিলম্বিত করারও প্রস্তাব দিচ্ছে। বিশেষ করে, যেসব কোম্পানির রফতানি যুক্তরাষ্ট্র কেন্দ্রীক, তাদের মধ্যে দুশ্চিন্তা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সংকট মোকাবেলা করতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছে, তবে কোনো সহজ সমাধান আসছে না।

উইকিটেক্স বিডির পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধি শিপমেন্টের ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করছে। ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিদিন নতুন শর্ত দিয়ে আসছে। কেউ দাম কমানোর দাবি করছে, কেউ আবার বাড়তি শুল্ক ভাগাভাগি করার প্রস্তাব দিচ্ছে।

উইকিটেক্স বিডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম সাইফুর রহমান ফরহাদ জানান, যেসব পণ্য ইতিমধ্যে শিপমেন্ট হয়েছে, ক্রেতা প্রতিষ্ঠান অনেক ক্ষেত্রে দাম কমানোর দাবি তুলছে। রানিং অর্ডারে গ্রাহকরা বলছেন, পূর্বে নির্ধারিত দামে পণ্য নিতে পারছেন না, কারণ তারা ৫৭ শতাংশ শুল্কের কথা বলছে। এই পরিস্থিতিতে কিছু নতুন প্রজেক্ট স্থগিত রাখা হয়েছে এবং কোম্পানিগুলো শিপমেন্ট চালু রাখতে শুল্কের বিষয়টি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত কোনও অগ্রগতি করতে পারছে না।

যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে চিঠি দিয়ে দামের বিষয়ে স্পষ্টকরণের তাগিদ দিয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠান চিঠিতে বলেছে, নতুন শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশে উৎপাদন চালু রাখা কঠিন হয়ে যাবে। তারা বলছে, চীন থেকে আরও সস্তায় পণ্য পাওয়া যাবে, তাই বাংলাদেশ থেকে সরাসরি আমদানি করা হবে না।

গার্মেন্টস বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি এ কে এম সাইফুর রহমান ফরহাদ আরও বলেন, সিএমটি (কাট, মেক অ্যান্ড ট্রিম) খাতে গ্রাহকদের দামের চাপ দিলে তা কতটুকু কমানো সম্ভব? কারণ ৭৫ শতাংশ খরচ অন্য দেশের (চীন, ভারত, ভিয়েতনাম) হাতে, যা বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে নেই।

এছাড়া, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৩৭ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির ফলে সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত। গত সোমবার প্রধান উপদেষ্টা মার্কিন সরকারের কাছে তিন মাস সময় চেয়ে চিঠি দিয়েছেন, তবে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, উৎপাদকদের জন্য শুল্ক ভাগ করা কঠিন হবে, কারণ বাংলাদেশে অনেক কম দামে কাজ করা হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের বার্ষিক রফতানি ৮ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি, যার মধ্যে ৭ বিলিয়ন ডলারই তৈরি পোশাকের রফতানি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের সার্বক্ষণিক তদারকি ও উদ্যোগের মাধ্যমে সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব।

বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান জানান, ৯ এপ্রিলের আগে যেসব শিপমেন্ট হয়েছে, সেগুলোর শুল্ক আগের নিয়মে হবে, আর ৯ এপ্রিলের পর নতুন শুল্ক কার্যকর হবে। তবে, বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। বায়াররা উদ্বিগ্ন, কিন্তু সরকারের আলোচনা চলছে, আশা করা যাচ্ছে সমাধান আসবে।

বাংলাদেশে মার্কিন পণ্যের অবাধ বাজার তৈরির জন্য সরকারের উদ্যোগে দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসবে, এমন ধারণা অনেকের।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স