ঢাকা | বঙ্গাব্দ

বাবার চেয়েও ভয়ংকর পুত্র পাপ্পা গাজী

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Jul 17, 2025 ইং
ছবির ক্যাপশন:

আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী বর্তমানে একাধিক গুরুতর অপরাধের দায়ে কারাগারে বন্দী রয়েছেন। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনি এবং তার পরিবার রূপগঞ্জের নিয়ন্ত্রণ কায়েম রেখে এলাকাটি শ্মশানের চেহারা দিয়েছেন। গাজী ও তার পরিবারের সদস্যরা হাজার কোটি টাকার লুণ্ঠন চালিয়েছে। যদিও গাজী নিজে গ্রেপ্তার হয়েছেন, তার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য এখনও পলাতক রয়েছে। গাজী একাই নয়, তার পৃষ্ঠপোষকতায় তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। তারা মাদক ব্যবসা, ভূমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধে যুক্ত ছিল।

গোলাম দস্তগীর গাজী রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে তার পুত্র গোলাম মূর্তজা পাপ্পাকে নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলেন। তবে পাপ্পা গাজী পিতার চেয়ে অধিক নিষ্ঠুর ও পৈশাচিক চরিত্রের অধিকারী হয়ে উঠেছেন। তার প্রধান কর্মকাণ্ড ছিল রূপগঞ্জে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ।

পাপ্পা গাজীর নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ মাদকের আবাসস্থল হিসেবে পরিণত হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রূপগঞ্জে মাদক ব্যবসা মূলত তার নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং তার নিজস্ব একটি বাহিনী ছিল। ধনী হওয়ার লোভে অনেকেই পাপ্পার সহযোগী হয়ে উঠেছিল। পুলিশ ও মাদক নিয়ন্ত্রণ দপ্তরকে হাতে নিয়ে পাপ্পা মাদক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে।

গোলাম মূর্তজা পাপ্পা গাজী, এমদাদুল হক দাদুল ও মিজানুর রহমান মিজান রূপগঞ্জের মাদক ব্যবসার মূল নিয়ন্ত্রক হিসেবে পরিচিত। তাদের আশ্রয়ে গত ১৬ বছরে অবাধে মাদক কারবার চলে আসছে। পাপ্পার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী সরাসরি বা পরোক্ষভাবে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। মাদক ব্যবসার কারণে রূপগঞ্জে অন্তত ৩৮ জন কোটিপতি হয়েছেন এবং ১৪ জন খুনের ঘটনা ঘটেছে।

রূপগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা মাদক কারবারের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। চনপাড়া বস্তি মাদকের প্রধান হাট। দাউদপুর এলাকায় অবৈধ চোলাই মদের কারখানাও গড়ে উঠেছে। উপজেলা পর্যায়ে প্রায় ৭০ হাজার মাদক সেবী রয়েছে, যাদের মাদকের জন্য খরচ শত কোটি টাকার ওপর। মাদক কারবারের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী ও খুচরা বিক্রেতার সংখ্যা হাজারের ওপরে।

রূপগঞ্জে মাদক পরিবহনে নিরাপদ রুট হিসেবে বালু ও শীতলক্ষ্যা নদীর পাশাপাশি বিভিন্ন সড়ক ব্যবহার করা হয়। মাদক বহনের জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করা হয়, যেখানে তরুণ-তরুণী এবং মহিলাদের ব্যবহার করা হয়।

মাদক কারবারের এই সম্রাজ্ঞী পাপ্পা গাজীর নিয়ন্ত্রণে রূপগঞ্জে ১৫ জন ‘মাদকসম্রাজ্ঞী’ রয়েছেন, যারা এলাকায় মাদক ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দিয়ে তরুণ সমাজকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

পাপ্পা গাজী নিয়োগ বাণিজ্যেও ব্যাপক কর্মকাণ্ড চালিয়ে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। সরকারি চাকরির জন্য প্রার্থীদের থেকে বিপুল অর্থ নেওয়া হলেও চাকরি পেয়েছে সামান্য কয়েকজন।

বর্তমানে পাপ্পা গাজী পলাতক, এবং খবর রয়েছে যে তিনি বিদেশে অবস্থান করে মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ করছেন।


নিউজটি আপডেট করেছেন : Abdur Rabby

কমেন্ট বক্স