মধ্যপ্রাচ্যের নির্যাতিত রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর সাম্প্রতিক হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দিবাগত রাতে গাজার বিভিন্ন এলাকায় এ হামলা চালানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাফাহ অঞ্চলে এক বন্দুক হামলায় একজন ইসরায়েলি সেনা আহত হওয়ার পরই প্রতিশোধমূলকভাবে এই বিমান হামলার নির্দেশ দেন নেতানিয়াহু। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, ইসরায়েলের আগ্রাসনের জেরে নিখোঁজ এক বন্দির মরদেহ হস্তান্তর আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।
হামাস আরও সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলের পক্ষ থেকে যদি বড় ধরনের উস্কানি বা হামলা চালানো হয়, তাহলে গাজায় মৃতদেহ উদ্ধারের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে এবং বাকি ১৩ জন জিম্মির মরদেহ উদ্ধারে বিলম্ব ঘটতে পারে।
অন্যদিকে, চলমান হামলা সত্ত্বেও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে. ডি. ভ্যান্স দাবি করেছেন, যুদ্ধবিরতি এখনো বহাল আছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “ছোটখাটো সংঘর্ষ হতে পারে, তবে আমরা আশা করি পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে।” তিনি আরও বলেন, “গাজায় একজন ইসরায়েলি সৈন্য আহত হয়েছেন, ইসরায়েল এর জবাব দেবে—এটাই স্বাভাবিক।”
অপরদিকে, হামাস জানিয়েছে, রাফাহতে ঘটে যাওয়া ঘটনাটির সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৯৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ কার্যক্রম কঠোরভাবে সীমিত করে রেখেছে দখলদার বাহিনী।
এক বিবৃতিতে হামাস বলেছে, ইসরায়েলের সর্বশেষ এই হামলা যুদ্ধবিরতির “স্পষ্ট লঙ্ঘন” এবং এটি তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করতে হবে। তারা দাবি করেছে, “আমরা চুক্তি মেনে চলছি, কিন্তু ইসরায়েল আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে।”
হামাস নেতা সুহাইল আল-হিন্দি আল জাজিরাকে বলেন, “আমরা মৃতদেহ উদ্ধারে নানা জটিলতার মুখে পড়েছি। যেসব মরদেহ এখনো উদ্ধৃত হয়নি, তার বিলম্বের দায় সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলের।”
Abdur Rabby
